জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৭৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে ৩ হাজার ১৮০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, প্রকল্প সহায়তা বা ঋণ থেকে আসবে ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি ৪৩ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থাকবে ২৩০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টার ক্ষমতাবলে ইতিপূর্বে অনুমোদিত ১৫টি প্রকল্প সম্পর্কে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের রয়েছে দুটি প্রকল্প। এর মধ্যে রয়েছে ‘উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত)’ এবং ‘বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও স্থানীয় জনসমাজের সমন্বিত সেবা ও জীবন-জীবিকা উন্নয়ন’ প্রকল্প। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রয়েছে ৭টি বিভাগীয় শহরে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘নবনির্মিত ৪টি মেরিন একাডেমিতে সিমুলেটর ও সংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থাপনের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প অনুমোদিত হয়। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘অ্যাক্সেস টু জাস্টিস ফর উইমেন’ প্রকল্পে নারীবান্ধব বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পটি অনুমোদন পেয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয় পেয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণের প্রকল্প, যা সার সংরক্ষণ ও বিতরণ ব্যবস্থাকে আধুনিক করবে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প হলো ‘কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ এবং ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে সমন্বিত সেবা জোরদারকরণ’। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘টিভিইটি টিচারস ফর দ্য ফিউচার (টিটিএফ) প্রোগ্রাম’ প্রকল্পের মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্পটির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন চারটি প্রকল্পে উন্নয়ন বাজেট ব্যবস্থাপনা, সরকারি ক্রয়, পরিসংখ্যান ও বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন অগ্রাধিকার পেয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প— ‘স্ট্রেংথেনিং পাবলিক অডিট থ্রু ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন’ এবং ‘স্ট্রেংথেনিং ডোমেস্টিক রেভিনিউ মোবিলাইজেশন’— প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমোদনও এদিন দেওয়া হয়।

একনেক সভায় অংশগ্রহণ করেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।