
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের টানা বিমান হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ‘ব্যাপক ও মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি’ হয়েছে বলে স্বীকার করেছে তেহরান। বুধবার (২৫ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই হামানে এই বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, “এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে আমাদের পরমাণু স্থাপনাগুলো ব্যাপক এবং খুবই বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ এই স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু বোমা বর্ষণ করেছে ইসরায়েলি এবং মার্কিন আগ্রাসনকারীরা।”
ইসমাইল বাঘাই জানান, ঠিক কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তার নির্ধারণ এখনো বাকি। ইরানের পরমাণু শক্তি কমিশন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহ পূর্ণাঙ্গ তথ্য বিশ্লেষণ করছে। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, হামলার মাত্রা ছিল নজিরবিহীন।
গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলা শুরু করে। এরপর ৯ দিন পর যুক্তরাষ্ট্রও হামলায় যোগ দেয়। টানা হামলার ১০তম দিন, ২২ জুন, ইরানের তিনটি কৌশলগত পরমাণু স্থাপনায় হামলার একদিন পর যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুদ্ধবিরতির পর ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বলেন, “ইরানের পরমাণু প্রকল্প কয়েক দশক পিছিয়ে গেছে এবং তারা আর কখনো এটি পুনরুজ্জীবিত করতে পারবে না।” তবে এই মন্তব্য নিয়ে ইসমাইল বাঘাই কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। আলজাজিরা সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও তিনি নীরব থাকেন।
বিশ্লেষকদের মতে, যদিও হামলায় ইরানের পরিকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে, তবে রাজনৈতিকভাবে তেহরান আন্তর্জাতিক মহলে ‘আক্রান্ত পক্ষ’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। চীন, ভারত ও ইউরোপ এখনো ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরানের পরমাণু প্রকল্প হয়তো ধাক্কা খেয়েছে, তবে তার মনোবল ভাঙেনি। ভবিষ্যতে প্রকল্প পুনরায় গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিতে পারে তেহরান।