
বাংলাদেশের আকাশে গতকাল (বৃহস্পতিবার) পবিত্র মহররম মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার মধ্য দিয়ে হিজরি ১৪৪৭ সনের শুভ সূচনা হয়েছে। ফলে আজ শুক্রবার থেকে নতুন হিজরি বছরের আনুষ্ঠানিক গণনা শুরু হয়েছে। এই অনুযায়ী, আগামী ৬ জুলাই (রোববার) দেশে পবিত্র আশুরা পালিত হবে।
গতকাল সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর, মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে জানানো হয়—বাংলাদেশের আকাশে মহররম মাসের চাঁদ দেখা গেছে।
মহররম হিজরি সালের প্রথম মাস এবং ইসলামের চারটি সম্মানিত মাসের একটি। ‘মহররম’ শব্দের অর্থই ‘সম্মানিত’। এ মাসের ১০ তারিখকে ‘আশুরা’ বলা হয়, যা ইসলামী ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও শোকাবহ দিন। হিজরি ৬১ সনের এই দিনে কারবালার প্রান্তরে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে শহীদ হন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
ইমাম হোসাইনের এই আত্মত্যাগ কেবল ইসলামের জন্যই নয়, বরং সমগ্র মানবতার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তাঁর শাহাদাত অন্যায়, জুলুম ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গঠনের চেতনায় অনুপ্রাণিত করে। আশুরা উপলক্ষে শিয়া মুসলিম সম্প্রদায় দেশব্যাপী নানা ধর্মীয় কর্মসূচি ও তাজিয়া মিছিলের আয়োজন করে থাকে।
চাঁদ দেখা কমিটির সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খান, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মিজানুর রহমান, ওয়াকফ প্রশাসক মো. নূর-ই-আলমসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
নতুন হিজরি সনের আগমন উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন বছর সবার জীবনে শান্তি, কল্যাণ ও রহমতের বারতা বয়ে আনুক—এই প্রার্থনা করা হয়।