জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব চাপিয়ে দিলে তা আর ‘ঐকমত্য’ থাকে না—এই মন্তব্য করে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এখন সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ সংস্কার যেন অলস আলাপ ও আপ্যায়নের খেলায় পরিণত না হয়।”
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যানালাইসিস নেটওয়ার্ক (ব্রেইন) আয়োজিত ‘জিয়াউর রহমান স্মারক গ্রন্থ’ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এক পর্যায়ে ব্যঙ্গ করে বলেন, “আমি সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে বলছিলাম একটা কবিতাই লিখে ফেলেন—‘হে সংস্কার, তোমাকে পাওয়ার জন্য আর কতকাল আলাপ-আলোচনা করিবে, খানাপিনা করিবে?’”
তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য যদি হয়—সবাইকে তাদের প্রস্তাব মেনে নিতে হবে, তবে সেটি আর ঐকমত্য নয়, সেটি চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত। আলোচনা ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমেই প্রকৃত সংস্কার হতে পারে। “সংস্কার তো একদিনে শেষ হয় না, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।”
সংবিধানকে ধর্মগ্রন্থে পরিণত করার প্রবণতার বিরোধিতা করে সালাহউদ্দিন বলেন, “তারা এমনভাবে সংবিধানে সংস্কার ঢুকাতে চাইছে যেন ভবিষ্যতে আর কেউ পরিবর্তন করতে না পারে। এটা তো বাইবেল নয়, ধর্মগ্রন্থ নয়।”
তিনি বলেন, “আমরা এমন সংস্কার চাই যা ১০/২০ বছর পর নতুন প্রজন্মের প্রয়োজন অনুযায়ী বদলানো যাবে। এটিই প্রকৃত সংস্কারের সৌন্দর্য।”
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ নিজেরাই সংবিধানের ৭ নম্বর সংশোধনী বাতিল করেছে, অথচ সংবিধানকে তারা এখন এমনভাবে মানে যেন সেটি অপরিবর্তনীয় ধর্মগ্রন্থ।”
তিনি আরও বলেন, “তাদের থিওরি যেন—তুমি যা লিখিবে তাহাই সত্য। আমি আর বলি না, বললে সমালোচনা হবে।”
সালাহউদ্দিন দাবি করেন, সংস্কারের মূল প্রবক্তা বিএনপি। অন্তর্বর্তী সরকারের দেড় বছর আগেই তারা ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল, যা এখন রাজনৈতিক মহলে এক ‘মহাকাব্য’ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি বলেন, “আমরা রিজিড নই, ৩১ দফায় উইন্ডো খুলে দিয়েছি—যেখান দিয়ে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত হয়, তা গ্রহণ করব।”
স্মারক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবনের প্রশংসা করে সালাহউদ্দিন নতুন প্রজন্মকে তার আদর্শ অনুসরণের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, পিআইবি মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, বিএনপির উপদেষ্টা মাহদী আমিন, সাঈদ আবদুল্লাহ, নিলোফার চৌধুরী মনি, চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস, মুসা আল হাফিজ, ফাহিম মাশরুর, কবি তুহিন খান, এবং সুবাইল বিন আলম প্রমুখ।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।