৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা নিয়ে রাজনৈতিক মহল, শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে তীব্র আপত্তি উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার কথা জানিয়েছে এবং দু-এক দিনের মধ্যে চূড়ান্ত অবস্থান জানানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
গত বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক পরিপত্রে ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’, ৫ আগস্টকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ এবং ১৬ জুলাইকে ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’ হিসেবে পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে এই ঘোষণার পরপরই শুরু হয় বিতর্ক, বিশেষ করে ৮ আগস্টকে ঘিরে।
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের একটি অংশ এবং নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, ৮ আগস্ট কেবলমাত্র অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেওয়ার দিন। মূল রাজনৈতিক পরিবর্তন এসেছিল ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “এখনো কোনো কাঠামোগত সংস্কার হয়নি। কেবল সরকার গঠনের দিনকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ হিসেবে তুলে ধরা বাস্তবতা বিবর্জিত।”
সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এনসিপির দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলের প্রধান সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম। তারা অভিযোগ করেন, সরকার আন্দোলনের ইতিহাসকে নিজের কৃতিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।
এ বিতর্কে যুক্ত হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানও। এক সংক্ষিপ্ত ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “৫ আগস্টকেই নতুন বাংলাদেশ দিবস ঘোষণা করা উচিত।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান বলেন, “দিবস ঘোষণা করে লিগ্যাসি তৈরি হয় না। বরং সরকারের কাজ, অর্জন ও নীতি-পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই তা স্বীকৃত হয়।”
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং এ বিষয়ে নমনীয় অবস্থান নিয়েই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
এদিকে, ঘোষিত অপর দুটি দিবস—৫ আগস্ট ‘গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ এবং ১৬ জুলাই ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’—নিয়ে আপাতত কোনো উল্লেখযোগ্য বিরোধিতা দেখা যায়নি।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।