০৯:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

“ডিবিকে লক্ষ্য করে গুলি, দেশ ছাড়ার চেষ্টা – শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পি

রাজধানীর ফকিরাপুলে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওপর গুলি চালিয়ে পালানো শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পি ওরফে মো. আলী ওরফে ফিরোজ আলম ওরফে আহসানুল হককে যশোর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দেশ ছেড়ে পালাতে গিয়ে তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকার এক সহযোগীর শ্বশুরবাড়িতে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের লালবাগ বিভাগ ও যশোর জেলা ডিবি যৌথভাবে ওই বাড়ি ঘিরে ফেলে এবং অভিযান চালিয়ে বাপ্পিকে আটক করে।

গ্রেপ্তার এড়াতে বাপ্পি অভিনব কৌশল নেয়। তিনি বাসার গ্যাস সিলিন্ডার খুলে দিয়ে পুলিশকে জিম্মি করার হুমকি দেন। বলেন, গ্রেপ্তার করতে এলে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শিশু ও নারীদের জীবন বিপন্ন করবেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা নেয় পুলিশ এবং অবশেষে তাকে নিরাপদে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার (২৭ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় বাপ্পির সঙ্গে থাকা তার দুই সহযোগী আবু খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে বোমা রিপন এবং মো. কামরুল হাসানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে পৃথক অভিযানে তাদের কাছ থেকে তিনটি বিদেশি পিস্তল, ছয়টি ম্যাগাজিন এবং মোট ১৫১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

রোববার (২৯ জুন) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ১৮ জুন রাতে রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক হাজার ইয়াবাসহ একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৯ জুন রাতে পল্টনে একটি গাড়ি থামানোর চেষ্টা করলে বাপ্পি গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। এরপর তার গাড়ি থেকে ৯ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

বাপ্পিকে গ্রেপ্তারে ঢাকা, বরিশাল, সাতক্ষীরা ও যশোরে একাধিক অভিযান চালায় ডিবি। অবশেষে যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকায় নজরুল ইসলামের বাড়িতে অবস্থানকালে তার অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালানো হয়।

পরে বাপ্পির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর ডেমরা এলাকায় তার বাসায় অভিযান চালিয়ে আরও দুটি বিদেশি পিস্তল, চারটি ম্যাগাজিন ও ১৫১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

ডিবি জানায়, বাপ্পির সন্ত্রাসী চক্রে অন্তত ২৫ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনকে ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাপ্পি ২০১০ সাল থেকে মাদক ব্যবসায় জড়িত এবং তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকসহ অন্তত ১১টি মামলা রয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে বাপ্পি অস্ত্র সংগ্রহের উৎস সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন, যা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া, গত কোরবানির ঈদে বাপ্পি তার দলের সদস্যদের ৭ লাখ টাকার ‘সালামি’ দিয়েছেন বলে তথ্য পেয়েছে ডিবি।

নাসিরুল ইসলাম জানান, বাপ্পি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় জুট ব্যবসায় আধিপত্য ধরে রাখতে অস্ত্র মজুদ করতেন এবং এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতেন। তার সঙ্গে হাতিরঝিল, ধানমন্ডি ও মিরপুর এলাকার কয়েকটি হত্যাকাণ্ড বা গুলির ঘটনার যোগসূত্র মিলেছে বলেও জানান তিনি।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

“ডিবিকে লক্ষ্য করে গুলি, দেশ ছাড়ার চেষ্টা – শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পি

প্রকাশিত হয়েছে: ০৮:১০:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

রাজধানীর ফকিরাপুলে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওপর গুলি চালিয়ে পালানো শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পি ওরফে মো. আলী ওরফে ফিরোজ আলম ওরফে আহসানুল হককে যশোর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দেশ ছেড়ে পালাতে গিয়ে তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকার এক সহযোগীর শ্বশুরবাড়িতে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের লালবাগ বিভাগ ও যশোর জেলা ডিবি যৌথভাবে ওই বাড়ি ঘিরে ফেলে এবং অভিযান চালিয়ে বাপ্পিকে আটক করে।

গ্রেপ্তার এড়াতে বাপ্পি অভিনব কৌশল নেয়। তিনি বাসার গ্যাস সিলিন্ডার খুলে দিয়ে পুলিশকে জিম্মি করার হুমকি দেন। বলেন, গ্রেপ্তার করতে এলে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শিশু ও নারীদের জীবন বিপন্ন করবেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা নেয় পুলিশ এবং অবশেষে তাকে নিরাপদে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার (২৭ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় বাপ্পির সঙ্গে থাকা তার দুই সহযোগী আবু খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে বোমা রিপন এবং মো. কামরুল হাসানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে পৃথক অভিযানে তাদের কাছ থেকে তিনটি বিদেশি পিস্তল, ছয়টি ম্যাগাজিন এবং মোট ১৫১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

রোববার (২৯ জুন) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ১৮ জুন রাতে রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক হাজার ইয়াবাসহ একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৯ জুন রাতে পল্টনে একটি গাড়ি থামানোর চেষ্টা করলে বাপ্পি গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। এরপর তার গাড়ি থেকে ৯ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

বাপ্পিকে গ্রেপ্তারে ঢাকা, বরিশাল, সাতক্ষীরা ও যশোরে একাধিক অভিযান চালায় ডিবি। অবশেষে যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকায় নজরুল ইসলামের বাড়িতে অবস্থানকালে তার অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালানো হয়।

পরে বাপ্পির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর ডেমরা এলাকায় তার বাসায় অভিযান চালিয়ে আরও দুটি বিদেশি পিস্তল, চারটি ম্যাগাজিন ও ১৫১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

ডিবি জানায়, বাপ্পির সন্ত্রাসী চক্রে অন্তত ২৫ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনকে ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাপ্পি ২০১০ সাল থেকে মাদক ব্যবসায় জড়িত এবং তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকসহ অন্তত ১১টি মামলা রয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে বাপ্পি অস্ত্র সংগ্রহের উৎস সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন, যা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া, গত কোরবানির ঈদে বাপ্পি তার দলের সদস্যদের ৭ লাখ টাকার ‘সালামি’ দিয়েছেন বলে তথ্য পেয়েছে ডিবি।

নাসিরুল ইসলাম জানান, বাপ্পি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় জুট ব্যবসায় আধিপত্য ধরে রাখতে অস্ত্র মজুদ করতেন এবং এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতেন। তার সঙ্গে হাতিরঝিল, ধানমন্ডি ও মিরপুর এলাকার কয়েকটি হত্যাকাণ্ড বা গুলির ঘটনার যোগসূত্র মিলেছে বলেও জানান তিনি।