আরবিতে:

لَا إِلٰهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

বাংলা উচ্চারণ:

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর।

বাংলা অর্থ:

আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো অংশীদার নেই। রাজত্ব শুধুই তাঁর, সমস্ত প্রশংসাও তাঁরই জন্য। তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।

বিশ্বের মুসলমানদের জন্য প্রতিটি যিকিরের মধ্যে রয়েছে এক অনন্য তাৎপর্য ও ফজিলত। এর মধ্যেই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় যিকির হলো— “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদির”। এই যিকিরটির ফজিলত নিয়ে অসংখ্য সহীহ হাদীসে স্পষ্টভাবে বর্ণনা রয়েছে, যা মুসলিম উম্মাহর দৈনন্দিন আমলে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে।

ইসলামের মহান শিক্ষাগুলোর অন্যতম হলো, আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস এবং তাঁর পূর্ণ মালিকানা ও প্রশংসা স্বীকার। এই যিকিরে এ তিনটি বিষয়ই গভীরভাবে অন্তর্ভুক্ত। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ দ্বারা আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই— এ কথার ঘোষণা দেওয়া হয়। ‘ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু’ দ্বারা তাঁর একত্ব ও অংশীদারিত্বহীনতা ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ‘লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু’ দ্বারা তাঁর মালিকানা ও প্রশংসা কেবল তাঁরই হওয়া স্বীকৃত হয়, এবং সবশেষে বলা হয়, ‘ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদির’— অর্থাৎ তিনি সব কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান।

এই যিকিরের ফজিলত সম্পর্কে সহীহ বুখারী ও মুসলিমে উল্লেখ রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: “যে ব্যক্তি এক দিনে একশ বার এই যিকিরটি পাঠ করে, তার জন্য একশটি নেকি লেখা হয়, একশটি গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়, তাকে শয়তান থেকে সারা দিন রক্ষা করা হয় এবং কেউ তা থেকে উত্তম কিছু নিয়ে আসতে পারবে না, যতক্ষণ না সে এই আমল থেকে বেশি করে।” (বুখারী ও মুসলিম)

এছাড়াও হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি এ যিকিরটি দিনে দশবার পাঠ করে, সে একটি দাস মুক্ত করার সওয়াব পায়। বিশেষজ্ঞ আলেমগণ বলেন, এ ধরনের যিকির শুধু মুখে নয়, হৃদয় থেকে পাঠ করলে আল্লাহর রহমত, বরকত ও আত্মিক প্রশান্তি অর্জন সহজ হয়।

প্রতিদিনের সকালে ও সন্ধ্যায়, ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর, এমনকি দৈনন্দিন ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে-ফাঁকে এ যিকির পাঠ করলে একজন মুমিনের ঈমান মজবুত হয় এবং তার দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ই আলোকিত হয়।