১০:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘনবসতিপূর্ণ বস্তিতে স্বাস্থ্যবিধি চর্চায় ব্যাপক উন্নতি: ব্র্যাক কর্মসূচির তথ্য

নিম্ন আয়ের নগর অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে ব্র্যাকের ‘স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেবার জন্য সমন্বিত পুনর্বাসন কর্মসূচি’। গত পাঁচ বছরে মিরপুর, মোহাম্মদপুর এবং সৈয়দপুর পৌরসভার ঘনবসতিপূর্ণ বস্তি এলাকায় স্যানিটারি টয়লেট ব্যবহারের হার ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯ শতাংশে। একই সময়ে নিরাপদ পানির ব্যবহার বেড়ে হয়েছে ৮০ শতাংশ, যা আগে ছিল মাত্র ৫১ শতাংশ।

এছাড়া নারীদের মাসিক স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের হার ৫৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯০ শতাংশে পৌঁছেছে। প্রসব-পূর্ব চারবার চিকিৎসাসেবা গ্রহণের হার ৪৫ শতাংশ থেকে দাঁড়িয়েছে ৭১ শতাংশে, আর প্রসব-পরবর্তী সেবা গ্রহণের হার বেড়ে ২১ শতাংশ থেকে হয়েছে ৪৯ শতাংশ। বর্তমানে ৯৪ শতাংশ পরিবার খাবার পানি ঢেকে রাখছে এবং মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের হার বেড়ে হয়েছে ৮৫ শতাংশ।

বুধবার (২ জুলাই) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। এতে ব্র্যাকের পাঁচ বছর মেয়াদী কর্মসূচির উপাত্ত, অভিজ্ঞতা ও নীতিগত সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। কর্মসূচিটি অর্থায়ন করেছে কিং আবদুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ প্রোগ্রাম এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইএসডিবি)।

কর্মশালার প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য ও ওয়াশ এমন একটি খাত যেখানে এক ডলার বিনিয়োগে প্রায় ৪.৩ ডলার ফেরত পাওয়া সম্ভব। এ প্রকল্পে বৈচিত্র্য আনতে হবে যাতে এটি নগরবাসীর জীবনে আরও দৃশ্যমান প্রভাব ফেলে।”

ব্র্যাকের ড. মো. লিয়াকত আলী বলেন, “এ প্রকল্প শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, বরং মানুষের আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে টেকসই স্বাস্থ্য-স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়তে সক্ষম হয়েছে।” ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রতিনিধি মো. আরিফ শহীদ বলেন, “স্বাস্থ্য খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা কমিউনিটির অংশগ্রহণে আরও প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী।”

ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক ডা. শায়লা ইসলাম বলেন, “প্রসব-পরবর্তী সেবা ও যক্ষ্মা ব্যবস্থাপনায় সফলতা এসেছে স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্যকর্মী ও জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে।”

কর্মশালায় স্থানীয় প্রতিনিধিরা বলেন, “এ ধরনের সমন্বিত উদ্যোগ নগরের স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে।” দিনব্যাপী এ কর্মশালায় আলোচনা পর্ব পরিচালনা করেন ইউডিপি-র কর্মসূচি প্রধান ইমামুল আজম শাহী এবং জাতীয় নগর স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নাজনীন আখতার।

বাংলাদেশের ঘনবসতিপূর্ণ নগর বস্তিগুলোর স্বাস্থ্যচিত্র পরিবর্তনে এই প্রকল্প ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণে একটি অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন।

ট্যাগ

সাইয়েদুল ইস্তেগফার : সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমা প্রার্থনার দোয়া

ঘনবসতিপূর্ণ বস্তিতে স্বাস্থ্যবিধি চর্চায় ব্যাপক উন্নতি: ব্র্যাক কর্মসূচির তথ্য

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:৪৫:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫

নিম্ন আয়ের নগর অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে ব্র্যাকের ‘স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেবার জন্য সমন্বিত পুনর্বাসন কর্মসূচি’। গত পাঁচ বছরে মিরপুর, মোহাম্মদপুর এবং সৈয়দপুর পৌরসভার ঘনবসতিপূর্ণ বস্তি এলাকায় স্যানিটারি টয়লেট ব্যবহারের হার ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯ শতাংশে। একই সময়ে নিরাপদ পানির ব্যবহার বেড়ে হয়েছে ৮০ শতাংশ, যা আগে ছিল মাত্র ৫১ শতাংশ।

এছাড়া নারীদের মাসিক স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় স্যানিটারি প্যাড ব্যবহারের হার ৫৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯০ শতাংশে পৌঁছেছে। প্রসব-পূর্ব চারবার চিকিৎসাসেবা গ্রহণের হার ৪৫ শতাংশ থেকে দাঁড়িয়েছে ৭১ শতাংশে, আর প্রসব-পরবর্তী সেবা গ্রহণের হার বেড়ে ২১ শতাংশ থেকে হয়েছে ৪৯ শতাংশ। বর্তমানে ৯৪ শতাংশ পরিবার খাবার পানি ঢেকে রাখছে এবং মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের হার বেড়ে হয়েছে ৮৫ শতাংশ।

বুধবার (২ জুলাই) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। এতে ব্র্যাকের পাঁচ বছর মেয়াদী কর্মসূচির উপাত্ত, অভিজ্ঞতা ও নীতিগত সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। কর্মসূচিটি অর্থায়ন করেছে কিং আবদুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ প্রোগ্রাম এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইএসডিবি)।

কর্মশালার প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য ও ওয়াশ এমন একটি খাত যেখানে এক ডলার বিনিয়োগে প্রায় ৪.৩ ডলার ফেরত পাওয়া সম্ভব। এ প্রকল্পে বৈচিত্র্য আনতে হবে যাতে এটি নগরবাসীর জীবনে আরও দৃশ্যমান প্রভাব ফেলে।”

ব্র্যাকের ড. মো. লিয়াকত আলী বলেন, “এ প্রকল্প শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, বরং মানুষের আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে টেকসই স্বাস্থ্য-স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়তে সক্ষম হয়েছে।” ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রতিনিধি মো. আরিফ শহীদ বলেন, “স্বাস্থ্য খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা কমিউনিটির অংশগ্রহণে আরও প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী।”

ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক ডা. শায়লা ইসলাম বলেন, “প্রসব-পরবর্তী সেবা ও যক্ষ্মা ব্যবস্থাপনায় সফলতা এসেছে স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্যকর্মী ও জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে।”

কর্মশালায় স্থানীয় প্রতিনিধিরা বলেন, “এ ধরনের সমন্বিত উদ্যোগ নগরের স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে।” দিনব্যাপী এ কর্মশালায় আলোচনা পর্ব পরিচালনা করেন ইউডিপি-র কর্মসূচি প্রধান ইমামুল আজম শাহী এবং জাতীয় নগর স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নাজনীন আখতার।

বাংলাদেশের ঘনবসতিপূর্ণ নগর বস্তিগুলোর স্বাস্থ্যচিত্র পরিবর্তনে এই প্রকল্প ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণে একটি অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন।