০১:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি ভিত্তিহীন: জয়শঙ্কর

ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনা ও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি আবারো প্রত্যাখ্যান করলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজউইক-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর বলেন, ৯ মে রাতে যখন পরিস্থিতি সবচেয়ে উত্তপ্ত ছিল, তখন তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন, এবং সেই সময় ট্রাম্প প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে মোদীর ফোনালাপ হয়।

জয়শঙ্করের ভাষায়, ভান্স সতর্ক করেছিলেন যে, পাকিস্তান বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যদি কিছু বিষয় তারা মেনে না নেয়। মোদী সোজাসাপ্টা জবাবে জানিয়ে দেন— ভারতও প্রস্তুত পাল্টা আঘাত হানতে। বাস্তবেও সে রাতেই পাকিস্তান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার জবাব ভারতও দেয়।

পরদিন সকালে মার্কো রুবিও ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান— পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির আলোচনা চায়। পরে পাকিস্তানি ডিজিএমও ভারতীয় ডিজিএমওকে ফোন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন।

এস জয়শঙ্কর স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমি ওই কক্ষে উপস্থিত ছিলাম। যুদ্ধবিরতি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সামরিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। এই বিষয়ে বাইরের কোনো পক্ষ ছিল না।”

 ট্রাম্পের ‘যুদ্ধ থামানোর’ দাবি ভিত্তিহীন

উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন যে, তাঁর কূটনৈতিক ভূমিকার কারণেই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছে, এমনকি ‘ট্রেড টক’ বা বাণিজ্য বিষয়ক আলোচনার ভূমিকার কথাও বলেছেন তিনি।

কিন্তু এস জয়শঙ্কর বলেন, “যারা বাণিজ্য নিয়ে কাজ করেন, তারা তাঁদের পেশাদারিত্ব নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। যুদ্ধবিরতির মতো কূটনৈতিক বিষয় এদের আওতার বাইরে।”

তিনি আরও বলেন, “এই যুদ্ধবিরতি কোনো আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার ফসল নয়। এটি একান্তই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা ও প্রতিক্রিয়ার ফল।”

 ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল আর চলবে না’

আন্তর্জাতিক মহলে পরমাণু উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও ভারত কড়া বার্তা দিয়েছে— পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ‘পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়’ দেখিয়ে আর ভারতকে দমন করা যাবে না। জয়শঙ্কর বলেন, “যদি ভারত আক্রান্ত হয়, ভারতও জবাব দেবে। আমাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম হলে, আমরা আর নীরব থাকব না।”

তিনি জানান, কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলা ছিল ‘অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ’। পাকিস্তান এই হামলার দায় অস্বীকার করলেও জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা জানি, কারা করেছে, কোথা থেকে করেছে— এবং আমরা সেই ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করেছি।”

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি ভিত্তিহীন: জয়শঙ্কর

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:১৫:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনা ও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি আবারো প্রত্যাখ্যান করলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজউইক-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর বলেন, ৯ মে রাতে যখন পরিস্থিতি সবচেয়ে উত্তপ্ত ছিল, তখন তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন, এবং সেই সময় ট্রাম্প প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে মোদীর ফোনালাপ হয়।

জয়শঙ্করের ভাষায়, ভান্স সতর্ক করেছিলেন যে, পাকিস্তান বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যদি কিছু বিষয় তারা মেনে না নেয়। মোদী সোজাসাপ্টা জবাবে জানিয়ে দেন— ভারতও প্রস্তুত পাল্টা আঘাত হানতে। বাস্তবেও সে রাতেই পাকিস্তান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার জবাব ভারতও দেয়।

পরদিন সকালে মার্কো রুবিও ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান— পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির আলোচনা চায়। পরে পাকিস্তানি ডিজিএমও ভারতীয় ডিজিএমওকে ফোন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন।

এস জয়শঙ্কর স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমি ওই কক্ষে উপস্থিত ছিলাম। যুদ্ধবিরতি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সামরিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। এই বিষয়ে বাইরের কোনো পক্ষ ছিল না।”

 ট্রাম্পের ‘যুদ্ধ থামানোর’ দাবি ভিত্তিহীন

উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন যে, তাঁর কূটনৈতিক ভূমিকার কারণেই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছে, এমনকি ‘ট্রেড টক’ বা বাণিজ্য বিষয়ক আলোচনার ভূমিকার কথাও বলেছেন তিনি।

কিন্তু এস জয়শঙ্কর বলেন, “যারা বাণিজ্য নিয়ে কাজ করেন, তারা তাঁদের পেশাদারিত্ব নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। যুদ্ধবিরতির মতো কূটনৈতিক বিষয় এদের আওতার বাইরে।”

তিনি আরও বলেন, “এই যুদ্ধবিরতি কোনো আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার ফসল নয়। এটি একান্তই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা ও প্রতিক্রিয়ার ফল।”

 ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল আর চলবে না’

আন্তর্জাতিক মহলে পরমাণু উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও ভারত কড়া বার্তা দিয়েছে— পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ‘পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়’ দেখিয়ে আর ভারতকে দমন করা যাবে না। জয়শঙ্কর বলেন, “যদি ভারত আক্রান্ত হয়, ভারতও জবাব দেবে। আমাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম হলে, আমরা আর নীরব থাকব না।”

তিনি জানান, কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলা ছিল ‘অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ’। পাকিস্তান এই হামলার দায় অস্বীকার করলেও জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা জানি, কারা করেছে, কোথা থেকে করেছে— এবং আমরা সেই ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করেছি।”