গাজায় ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মিশর নতুন করে সক্রিয় হয়েছে বলে জানিয়েছে কায়রো ভিত্তিক সূত্র। হামাসের কাছ থেকে একটি “ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া” পাওয়ার পর মিশর বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে ‘কায়রো নিউজ চ্যানেল’।
সূত্রগুলো জানায়, হামাস মধ্যস্থতাকারীদের সাম্প্রতিক প্রস্তাবের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। এতে উল্লেখ রয়েছে— প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে, ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য পরোক্ষ আলোচনা শুরু করা যেতে পারে।
হামাস এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করে, তারা প্রস্তাবটি “গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেছে” এবং বাস্তবায়নের জন্য তাৎক্ষণিক আলোচনায় প্রবেশ করতে আগ্রহী। তবে প্রস্তাবের বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।
হিব্রু ও মার্কিন গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, প্রস্তাবিত চুক্তিতে হামাস পাঁচ ধাপে ১০ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দী ও ১৮ জনের মৃতদেহ হস্তান্তর করবে। বিনিময়ে ইসরায়েলও বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি দেবে এবং গাজার নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকে ধীরে ধীরে সেনা প্রত্যাহার করবে।
তবে ইসরায়েলি শর্ত অনুযায়ী, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ ও নেতৃত্বকে বিদেশে নির্বাসনের দাবি একটি বিতর্কিত ইস্যু হতে পারে।
ইসরায়েলের ধারণা, গাজায় এখনো ৫০ জন ইসরায়েলি বন্দী রয়েছে, যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত। বিপরীতে, ১০,৪০০-রও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দী ইসরায়েলি কারাগারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার, যাদের মধ্যে অনেকেই মৃত্যু, অনাহার বা চিকিৎসাহীনতায় ভুগছেন।
ইসরায়েলি চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, হামাস প্রস্তাবে রাজি হলে, একটি ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল দোহায় যাবে এবং “দেড় দিনের মধ্যে” চুক্তি চূড়ান্ত করতে পারে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন, যেখানে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক অভিযান চলছে। এতে এখন পর্যন্ত ১,৯৩,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত বা আহত হয়েছেন। এরমধ্যে অধিকাংশই শিশু ও নারী। নিখোঁজ রয়েছেন ১০,০০০-র বেশি, আর বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।
এদিকে দুর্ভিক্ষেও মারা গেছেন বহু মানুষ, যার মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। আন্তর্জাতিক আহ্বান এবং যুদ্ধবিরতির আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে ইসরায়েলের অভিযান চলছেই।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।