🔔 পবিত্রআশুরাবা১০মহররমইসলামেরইতিহাসেগভীরতাৎপর্যময়ওশ্রদ্ধাভাজনএকটিদিন। এই দিনে সংঘটিত হয়েছে বহু ঐতিহাসিক ঘটনা, যেগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কুদরত, তাঁর প্রিয় নবীদের বিজয় এবং জালিমদের ধ্বংস বারংবার প্রতিফলিত হয়েছে। পাশাপাশি আশুরা আমাদের সামনে আত্মত্যাগ, ধৈর্য ও তাওবার এক উজ্জ্বল আদর্শ স্থাপন করে।

✅ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
“আমি মনে করি, আশুরার রোযা আগের বছরের গুনাহ মাফ করিয়ে দেয়।”
— (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ১১৬২)

✅ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন:
“রাসূল (ﷺ) মদিনায় এসে দেখলেন, ইয়াহুদিরা আশুরার দিন রোযা রাখছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কেন? তারা বলল, এ দিন আল্লাহ মূসা (আ.) ও তাঁর কওমকে মুক্তি দিয়েছেন। তাই কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আমরা রোযা রাখি।”
— নবী করীম (ﷺ) তখন বললেন, ‘আমরা তো মূসার অধিক হকদার।’ অতঃপর তিনি নিজেও রোযা রাখলেন এবং সাহাবীদের রোযা রাখতে নির্দেশ দিলেন।”
— (সহীহ বুখারী, হাদীস: ২০০৪)

✅ আরও বর্ণনায় আছে:
“তোমরা আশুরার দিনে রোযা রাখো এবং তার আগে বা পরে আরেকটি রোযা রাখো, যাতে ইয়াহুদিদের সাথে সাদৃশ্য না হয়।”
— (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস: ২১৫৫)

🕋 আশুরার দিন সংঘটিত ১০টি উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক ঘটনা:

১. আল্লাহ তায়ালা এই দিনে আসমান–জমিন সৃষ্টি করেন।
২. হজরত আদম (আ.)-এর দোয়া কবুল ও পৃথিবীতে আগমন।
৩. নূহ (আ.)-এর তুফান শেষে নৌকার স্থির হওয়া।
৪. ইবরাহিম (আ.)-এর অগ্নিকুণ্ড থেকে মুক্তি।
৫. আইয়ুব (আ.)-এর রোগমুক্তি ও ধৈর্যের পুরস্কার।
৬. ইউসুফ (আ.)-এর পিতার সঙ্গে দীর্ঘদিন পর মিলন।
৭. ইউনুস (আ.)-এর মাছের পেট থেকে মুক্তি।
৮. মুসা (আ.) ও তাঁর অনুসারীদের মুক্তি এবং ফেরাউনের ধ্বংস।
৯. ঈসা (আ.)-কে জীবিত অবস্থায় আসমানে তোলা।
🔟 কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাত।

🔹 এই দিন আমাদেরকে শিক্ষা দেয়—
আল্লাহর প্রতি ঈমান, ধৈর্য, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো, এবং সত্য ও ন্যায়ের জন্য আত্মত্যাগ করতে কখনো ভয় না পাওয়া।

🔹 এ দিন শোক নয়, বরং আত্মশুদ্ধি, তাওবা, ইবাদত, রোযা, কোরআন তিলাওয়াত এবং জিকিরের মাধ্যমে কাটানোই প্রকৃত মুসলিম মানসিকতা।

🔹 এই দিনে ইয়াজিদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শহীদ হওয়া আমাদেরকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে অনুপ্রেরণা দেয়।

✅ আশুরার দিন (১০ মহররম) রোযা রাখা
✅ ৯ ও ১০ অথবা ১০ ও ১১ মহররম রোযা রাখা
✅ কুরআন তিলাওয়াত, জিকির, সালাত আদায়, সদকা
✅ আত্মীয়তা রক্ষা, হক আদায়, গীবত ও গুনাহ থেকে বিরত থাকা
✅ এই দিনটিকে শির্ক বা বিদআতের ছোঁয়া থেকে মুক্ত রাখা

📢 মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান:
আসুন, পবিত্র আশুরা থেকে আমরা শিক্ষা নিই—আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা, ধৈর্য, তাওবা এবং ন্যায়ের পথে অবিচল থাকা। একে শোক ও বাহ্যিকতা দিয়ে নয়, বরং আত্মশুদ্ধি ও ইবাদতের মাধ্যমে পালন করি।

✒️ আল্লাহ আমাদের সবাইকে আশুরার দিন ও তার তাৎপর্য বুঝে আমল করার তাওফিক দিন। আমিন।