
গাজার বিতর্কিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF)’–এ কর্মরত এক সাবেক নিরাপত্তাকর্মী বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন যে, ক্ষুধার্ত নারী, শিশু ও বয়স্ক ফিলিস্তিনিদের ওপর মেশিনগান দিয়ে গুলি চালাতে দেখেছেন তিনি।
বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই কর্মী বলেন, “একজন প্রহরী টাওয়ার থেকে বের হয়ে ১৫–২০টি করে গুলি চালাচ্ছিল। একজন ফিলিস্তিনি মাটিতে পড়ে গেলে পাশের আরেক প্রহরী বলে ওঠে— ‘তুমি সম্ভবত একজনকে মেরে ফেলেছো!’ এরপর তারা হেসে ওঠে।”
GHF এসব অভিযোগকে “পুরোপুরি মিথ্যা” বলে দাবি করেছে। তারা জানিয়েছে, “ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে কোনো বেসামরিক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হননি।” সংস্থাটি ওই কর্মীকে “অসন্তুষ্ট ও বরখাস্তকৃত” হিসেবে উল্লেখ করলেও, তিনি বেতন স্লিপ দেখিয়ে দাবি করেন, বরখাস্ত নয়, তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন।
ওই কর্মীর ভাষ্য অনুযায়ী, নিরাপত্তারক্ষীদের কোনো স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি ছিল না। বরং নির্দেশ ছিল— “যদি হুমকি মনে করো, গুলি করো, পরে প্রশ্ন করো।” তিনি বলেন, সিসিটিভির মাধ্যমে সব নজরদারি হলেও ঘটনাগুলো গোপন রাখা হয়।
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা জানায়, GHF শুরু হওয়ার পর থেকে ত্রাণ সংগ্রহে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। GHF বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে ১৭০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক এনজিও।
তবে ইসরায়েল দাবি করছে, এই পদক্ষেপ হামাসকে খাদ্য সরবরাহের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। আর GHF বলছে, তারা গত পাঁচ সপ্তাহে ৫ কোটি ২০ লাখ খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েল গাজায় অভিযান শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত সেখানে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৫৭,১৩০ জন।