১০:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পবিত্র আশুরা আজ

🔹 ১. আশুরার রোযার ফজিলত সম্পর্কে হাদীস:

📖 সাহীহ মুসলিম:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন:

“রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার দিন রোযা রাখতেন এবং মুসলিমদেরও তা রাখার আদেশ দিতেন।”
(সাহীহ মুসলিম, হাদীস: ১১৩০)

📖 সাহীহ বুখারী:
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন,

“নবী করিম (সা.) মদীনায় আগমন করে দেখতে পান, ইহুদিরা আশুরার দিনে রোযা রাখে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ কী রোযা? তারা বলল, এ এক মহান দিন; এই দিনে আল্লাহ মূসা (আ.) ও তাঁর জাতিকে মুক্তি দিয়েছিলেন এবং ফিরআউনকে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। এজন্য আমরা কৃতজ্ঞতা স্বরূপ রোযা রাখি। তখন নবী (সা.) বলেন, ‘আমরা মূসার (আ.) প্রতি তোমাদের চেয়ে অধিক হকদার।’ এরপর তিনি নিজেও সে রোযা রাখলেন এবং সাহাবীদেরও আদেশ দিলেন।”
(সাহীহ বুখারী, হাদীস: ২০০৪)

📖 মুসলিম শরীফ:
আবু কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত:

“আশুরার রোযা বিগত এক বছরের গোনাহ মাফ করে দেয়।”
(সহীহ মুসলিম, হাদীস: ১১৬২)

🔸 অতএব, আশুরার রোযা শুধু কারবালার কারণে নয়, বরং ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকেই একটি ফজিলতপূর্ণ আমল হিসেবে পরিচিত।

🔹 ২. কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনার হাদীসসংক্রান্ত আলোচনা:

কারবালার ঘটনা মূলত ইতিহাসনির্ভর। তবে হজরত ইমাম হোসেন (রা.) সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বিভিন্ন হাদীস রয়েছে, যা তার মর্যাদা ও পরিণতি সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়:

📖 তিরমিজি শরীফ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:

“হোসেন আমার থেকে, আর আমি হোসেন থেকে। হোসেনকে ভালোবাসে সে, যাকে আল্লাহ ভালোবাসেন।”
(তিরমিজি, হাদীস: ৩৭৭৫)

📖 মুসনাদে আহমাদ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:

“হাসান ও হোসেন জান্নাতী যুবকদের নেতা।”
(মুসনাদে আহমাদ, হাদীস: ১০৬৯)

এই হাদীসগুলো হযরত ইমাম হোসেন (রা.)-এর রুহানি অবস্থান, সাহস ও আত্মত্যাগের ভিত্তি তৈরি করে। তাঁর শাহাদাত নিছক রাজনীতির ফল ছিল না; বরং সত্য, ইনসাফ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এক চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত।

🔹 ৩. কারবালার শিক্ষা ও আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি:

ইমাম হোসেন (রা.)-এর আত্মত্যাগ ইসলামি মূল্যবোধ, ইনসাফ ও ন্যায়ের পক্ষে বলিষ্ঠ অবস্থানকে প্রতিনিধিত্ব করে। তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল রাসূলের শিক্ষা অনুসরণে সত্যের পথে অটল থাকা।

📖 হাদীসের আলোকে শিক্ষা:

“সর্বোত্তম জিহাদ হলো, একজন জালিম শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।”
(সুনান আবু দাউদ, হাদীস: ৪৩৪৪)

এই হাদীসটির বাস্তব উদাহরণ হচ্ছেন হযরত ইমাম হোসেন (রা.), যিনি জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন।

 

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

পবিত্র আশুরা আজ

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:১১:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫

🔹 ১. আশুরার রোযার ফজিলত সম্পর্কে হাদীস:

📖 সাহীহ মুসলিম:
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন:

“রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশুরার দিন রোযা রাখতেন এবং মুসলিমদেরও তা রাখার আদেশ দিতেন।”
(সাহীহ মুসলিম, হাদীস: ১১৩০)

📖 সাহীহ বুখারী:
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন,

“নবী করিম (সা.) মদীনায় আগমন করে দেখতে পান, ইহুদিরা আশুরার দিনে রোযা রাখে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ কী রোযা? তারা বলল, এ এক মহান দিন; এই দিনে আল্লাহ মূসা (আ.) ও তাঁর জাতিকে মুক্তি দিয়েছিলেন এবং ফিরআউনকে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। এজন্য আমরা কৃতজ্ঞতা স্বরূপ রোযা রাখি। তখন নবী (সা.) বলেন, ‘আমরা মূসার (আ.) প্রতি তোমাদের চেয়ে অধিক হকদার।’ এরপর তিনি নিজেও সে রোযা রাখলেন এবং সাহাবীদেরও আদেশ দিলেন।”
(সাহীহ বুখারী, হাদীস: ২০০৪)

📖 মুসলিম শরীফ:
আবু কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত:

“আশুরার রোযা বিগত এক বছরের গোনাহ মাফ করে দেয়।”
(সহীহ মুসলিম, হাদীস: ১১৬২)

🔸 অতএব, আশুরার রোযা শুধু কারবালার কারণে নয়, বরং ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকেই একটি ফজিলতপূর্ণ আমল হিসেবে পরিচিত।

🔹 ২. কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনার হাদীসসংক্রান্ত আলোচনা:

কারবালার ঘটনা মূলত ইতিহাসনির্ভর। তবে হজরত ইমাম হোসেন (রা.) সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বিভিন্ন হাদীস রয়েছে, যা তার মর্যাদা ও পরিণতি সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়:

📖 তিরমিজি শরীফ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:

“হোসেন আমার থেকে, আর আমি হোসেন থেকে। হোসেনকে ভালোবাসে সে, যাকে আল্লাহ ভালোবাসেন।”
(তিরমিজি, হাদীস: ৩৭৭৫)

📖 মুসনাদে আহমাদ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:

“হাসান ও হোসেন জান্নাতী যুবকদের নেতা।”
(মুসনাদে আহমাদ, হাদীস: ১০৬৯)

এই হাদীসগুলো হযরত ইমাম হোসেন (রা.)-এর রুহানি অবস্থান, সাহস ও আত্মত্যাগের ভিত্তি তৈরি করে। তাঁর শাহাদাত নিছক রাজনীতির ফল ছিল না; বরং সত্য, ইনসাফ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এক চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত।

🔹 ৩. কারবালার শিক্ষা ও আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি:

ইমাম হোসেন (রা.)-এর আত্মত্যাগ ইসলামি মূল্যবোধ, ইনসাফ ও ন্যায়ের পক্ষে বলিষ্ঠ অবস্থানকে প্রতিনিধিত্ব করে। তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল রাসূলের শিক্ষা অনুসরণে সত্যের পথে অটল থাকা।

📖 হাদীসের আলোকে শিক্ষা:

“সর্বোত্তম জিহাদ হলো, একজন জালিম শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।”
(সুনান আবু দাউদ, হাদীস: ৪৩৪৪)

এই হাদীসটির বাস্তব উদাহরণ হচ্ছেন হযরত ইমাম হোসেন (রা.), যিনি জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন।