১২:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

“নেতানিয়াহু বললেন— গাজার হামাস রাষ্ট্র নয়, সন্ত্রাসের গর্ত”

যুক্তরাষ্ট্র সফররত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তিনি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তি চান, তবে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ইসরায়েলের জন্য হুমকি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। তার মতে, ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ইসরায়েল ধ্বংসের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে, সে কারণে নিরাপত্তার সার্বভৌম ক্ষমতা কেবলমাত্র ইসরায়েলের হাতেই থাকবে।

হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নিয়ে নেতানিয়াহু এসব কথা বলেন। তিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে হামাসের হামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ওই হামলাই দেখিয়ে দিয়েছে—ফিলিস্তিনিদের হাতে রাষ্ট্র গেলে তারা কী করতে পারে।

এক সাংবাদিকের প্রশ্নে যে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মাঝে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান আদৌ সম্ভব কি না, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আমি জানি না।” এরপর সাংবাদিকদের নেতানিয়াহুর দিকে তাকাতে বলেন তিনি।

প্রশ্নের জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, “ফিলিস্তিনিদের নিজেদের শাসন করার পূর্ণ অধিকার থাকা উচিত। তবে তাদের এমন কোনো ক্ষমতা থাকা উচিত নয়, যা আমাদের জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে। এর অর্থ, সার্বভৌম নিরাপত্তার ক্ষমতা আমাদের হাতেই থাকবে।”

তিনি বলেন, “২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর অনেকে বলছেন—ফিলিস্তিনিদের একটি রাষ্ট্র আছে, গাজায় হামাসের রাষ্ট্র। দেখুন, তারা কী করেছে। রাষ্ট্র গড়ে না, বরং সুড়ঙ্গ, বাঙ্কার বানিয়ে সন্ত্রাস চালায়। তারা আমাদের নাগরিকদের গণহত্যা করে, নারীদের ধর্ষণ, পুরুষদের শিরশ্ছেদ করে। শহর ও গ্রামে নৃশংস হামলা চালায়।”

নেতানিয়াহু দাবি করেন, “এই ধরনের সহিংসতা আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও নাৎসিদের সময় ছাড়া কখনও দেখিনি। এই কারণেই কেউ বলবে না যে, ‘তাদের আরেকটা রাষ্ট্র দিই।’ সেটা ইসরায়েল ধ্বংসের প্ল্যাটফর্ম হয়ে যাবে।”

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা আমাদের সেই প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি চাই, যারা আমাদের ধ্বংস করতে চায় না। তবে সেই শান্তির শর্ত হলো—নিরাপত্তা ক্ষমতা কেবল ইসরায়েলের হাতেই থাকবে।”

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “মানুষ এখন বলছে, এটিকে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র বলা যাবে না। এটা হয়তো রাষ্ট্রই নয়। কিন্তু আমরা এতে কিছু মনে করি না। আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি—স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র কখনই হতে দেব না। এখনো না, ভবিষ্যতেও না।”

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিনিরা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেম নিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। তবে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড—বিশেষ করে পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন ও গাজায় অব্যাহত সামরিক হামলার ফলে—অনেকে অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল এই সম্ভাবনা ধ্বংস করছে। যদিও তেলআভিভ এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

“নেতানিয়াহু বললেন— গাজার হামাস রাষ্ট্র নয়, সন্ত্রাসের গর্ত”

প্রকাশিত হয়েছে: ০৬:২৭:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র সফররত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তিনি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তি চান, তবে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ইসরায়েলের জন্য হুমকি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। তার মতে, ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ইসরায়েল ধ্বংসের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে, সে কারণে নিরাপত্তার সার্বভৌম ক্ষমতা কেবলমাত্র ইসরায়েলের হাতেই থাকবে।

হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নিয়ে নেতানিয়াহু এসব কথা বলেন। তিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে হামাসের হামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ওই হামলাই দেখিয়ে দিয়েছে—ফিলিস্তিনিদের হাতে রাষ্ট্র গেলে তারা কী করতে পারে।

এক সাংবাদিকের প্রশ্নে যে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মাঝে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান আদৌ সম্ভব কি না, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আমি জানি না।” এরপর সাংবাদিকদের নেতানিয়াহুর দিকে তাকাতে বলেন তিনি।

প্রশ্নের জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, “ফিলিস্তিনিদের নিজেদের শাসন করার পূর্ণ অধিকার থাকা উচিত। তবে তাদের এমন কোনো ক্ষমতা থাকা উচিত নয়, যা আমাদের জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে। এর অর্থ, সার্বভৌম নিরাপত্তার ক্ষমতা আমাদের হাতেই থাকবে।”

তিনি বলেন, “২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর অনেকে বলছেন—ফিলিস্তিনিদের একটি রাষ্ট্র আছে, গাজায় হামাসের রাষ্ট্র। দেখুন, তারা কী করেছে। রাষ্ট্র গড়ে না, বরং সুড়ঙ্গ, বাঙ্কার বানিয়ে সন্ত্রাস চালায়। তারা আমাদের নাগরিকদের গণহত্যা করে, নারীদের ধর্ষণ, পুরুষদের শিরশ্ছেদ করে। শহর ও গ্রামে নৃশংস হামলা চালায়।”

নেতানিয়াহু দাবি করেন, “এই ধরনের সহিংসতা আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও নাৎসিদের সময় ছাড়া কখনও দেখিনি। এই কারণেই কেউ বলবে না যে, ‘তাদের আরেকটা রাষ্ট্র দিই।’ সেটা ইসরায়েল ধ্বংসের প্ল্যাটফর্ম হয়ে যাবে।”

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা আমাদের সেই প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি চাই, যারা আমাদের ধ্বংস করতে চায় না। তবে সেই শান্তির শর্ত হলো—নিরাপত্তা ক্ষমতা কেবল ইসরায়েলের হাতেই থাকবে।”

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “মানুষ এখন বলছে, এটিকে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র বলা যাবে না। এটা হয়তো রাষ্ট্রই নয়। কিন্তু আমরা এতে কিছু মনে করি না। আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি—স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র কখনই হতে দেব না। এখনো না, ভবিষ্যতেও না।”

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিনিরা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেম নিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। তবে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড—বিশেষ করে পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন ও গাজায় অব্যাহত সামরিক হামলার ফলে—অনেকে অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল এই সম্ভাবনা ধ্বংস করছে। যদিও তেলআভিভ এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে।