১০:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘ইয়া ওয়াদুদু’—আল্লাহর প্রেমময় নাম ও হৃদয় ছোঁয়া দোয়া

“ইয়া ওয়াদুদু” (يا ودود) একটি আরবি বাক্যাংশ, যার বাংলা অর্থ হলো—“হে পরম প্রেমময়”। এটি আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নামের (আস্‌মা-উল হুসনা) অন্যতম একটি নাম ‘আল‑ওয়াদুদ’ (الودود)-এর প্রতি সম্বোধন। এই নামটি আল্লাহর নিখাদ ভালোবাসা ও দয়ার নিদর্শন বহন করে। তিনি তাঁর সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেন করুণা, দয়া, রহমত ও ক্ষমার মাধ্যমে।

আল‑কুরআনে ‘আল‑ওয়াদুদ’ নামটি দুটি স্থানে এসেছে। সূরা হূদ (১১:৯০)-এ বলা হয়েছে, “নিশ্চয়ই আমার রব দয়ালু ও পরম প্রেমময়।” আর সূরা বুরুজ (৮৫:১৪)-এ বলা হয়েছে, “তিনিই ক্ষমাশীল, পরম প্রেমময়।” এই আয়াতগুলো প্রমাণ করে যে, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা রাখেন এবং তাঁর ক্ষমা ও করুণা থেকে কেউ বঞ্চিত হয় না।

‘আল‑ওয়াদুদ’ শব্দটি “ওয়ুদ” (ود) মূল থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ ভালোবাসা, স্নেহ ও গভীর অনুরাগ। ইসলামী পণ্ডিতদের মতে, আল্লাহর এই নাম এমন এক প্রেমের পরিচয় বহন করে, যা নিছক আবেগ নয়—বরং কাজের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য অনুগ্রহ, হেদায়াত, ক্ষমা ও দয়ার ব্যবস্থা করেন; তাদের প্রয়োজন পূরণ করেন, এমনকি তারা ভুল করলে ক্ষমাও করেন।

লোকচর্যায় বিশ্বাস করা হয়, ‘ইয়া ওয়াদুদু’ পড়ার মাধ্যমে হৃদয়ে প্রেম-ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন কমে। বিশেষ করে দাম্পত্য জীবনে শান্তি ও হৃদ্যতা বজায় রাখতে অনেকে এই নামটি নির্দিষ্ট সংখ্যক বার পাঠ করে থাকেন। যেমন, কেউ কেউ বলেন—প্রতিদিন ১০০১ বার পাঠ করে খাবারে ফুঁ দিয়ে খাওয়ালে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মজবুত হয়। তবে এসব আমল সরাসরি কোরআন বা সহিহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত না হলেও বহু মানুষ আত্মিক প্রশান্তির জন্য এগুলো করে থাকেন।

আল্লাহর নাম ‘আল‑ওয়াদুদ’ আমাদের শেখায় যে, তিনি কেবল সৃষ্টিকর্তাই নন, বরং আমাদের স্নেহময় অভিভাবক। তাঁর প্রতি ডাকে, যেমন ‘ইয়া ওয়াদুদু’, আমরা তাঁর ভালোবাসা ও রহমত কামনা করি। এই নামটি পাঠ করার মাধ্যমে আমরা নিজের হৃদয়কেও নরম করি, মানুষকে ভালোবাসতে শিখি এবং আল্লাহর দয়ার ছায়া কামনা করি।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

‘ইয়া ওয়াদুদু’—আল্লাহর প্রেমময় নাম ও হৃদয় ছোঁয়া দোয়া

প্রকাশিত হয়েছে: ০১:২২:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

“ইয়া ওয়াদুদু” (يا ودود) একটি আরবি বাক্যাংশ, যার বাংলা অর্থ হলো—“হে পরম প্রেমময়”। এটি আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নামের (আস্‌মা-উল হুসনা) অন্যতম একটি নাম ‘আল‑ওয়াদুদ’ (الودود)-এর প্রতি সম্বোধন। এই নামটি আল্লাহর নিখাদ ভালোবাসা ও দয়ার নিদর্শন বহন করে। তিনি তাঁর সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেন করুণা, দয়া, রহমত ও ক্ষমার মাধ্যমে।

আল‑কুরআনে ‘আল‑ওয়াদুদ’ নামটি দুটি স্থানে এসেছে। সূরা হূদ (১১:৯০)-এ বলা হয়েছে, “নিশ্চয়ই আমার রব দয়ালু ও পরম প্রেমময়।” আর সূরা বুরুজ (৮৫:১৪)-এ বলা হয়েছে, “তিনিই ক্ষমাশীল, পরম প্রেমময়।” এই আয়াতগুলো প্রমাণ করে যে, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা রাখেন এবং তাঁর ক্ষমা ও করুণা থেকে কেউ বঞ্চিত হয় না।

‘আল‑ওয়াদুদ’ শব্দটি “ওয়ুদ” (ود) মূল থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ ভালোবাসা, স্নেহ ও গভীর অনুরাগ। ইসলামী পণ্ডিতদের মতে, আল্লাহর এই নাম এমন এক প্রেমের পরিচয় বহন করে, যা নিছক আবেগ নয়—বরং কাজের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য অনুগ্রহ, হেদায়াত, ক্ষমা ও দয়ার ব্যবস্থা করেন; তাদের প্রয়োজন পূরণ করেন, এমনকি তারা ভুল করলে ক্ষমাও করেন।

লোকচর্যায় বিশ্বাস করা হয়, ‘ইয়া ওয়াদুদু’ পড়ার মাধ্যমে হৃদয়ে প্রেম-ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন কমে। বিশেষ করে দাম্পত্য জীবনে শান্তি ও হৃদ্যতা বজায় রাখতে অনেকে এই নামটি নির্দিষ্ট সংখ্যক বার পাঠ করে থাকেন। যেমন, কেউ কেউ বলেন—প্রতিদিন ১০০১ বার পাঠ করে খাবারে ফুঁ দিয়ে খাওয়ালে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মজবুত হয়। তবে এসব আমল সরাসরি কোরআন বা সহিহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত না হলেও বহু মানুষ আত্মিক প্রশান্তির জন্য এগুলো করে থাকেন।

আল্লাহর নাম ‘আল‑ওয়াদুদ’ আমাদের শেখায় যে, তিনি কেবল সৃষ্টিকর্তাই নন, বরং আমাদের স্নেহময় অভিভাবক। তাঁর প্রতি ডাকে, যেমন ‘ইয়া ওয়াদুদু’, আমরা তাঁর ভালোবাসা ও রহমত কামনা করি। এই নামটি পাঠ করার মাধ্যমে আমরা নিজের হৃদয়কেও নরম করি, মানুষকে ভালোবাসতে শিখি এবং আল্লাহর দয়ার ছায়া কামনা করি।