
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য পুনরাগমন নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিটিশ পত্রিকা The Daily Telegraph এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তিচুক্তির জন্য মধ্যস্থতা করতে পারেন—তবে শর্ত থাকবে ইউক্রেনকে তার কিছু ভূখণ্ড রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দিতে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের সম্ভাব্য অবস্থান হলো, যুদ্ধ বন্ধের বিনিময়ে ইউক্রেনকে “Special Military Operation (SMO)” জোনে রুশ বাহিনীর দখলকৃত অঞ্চলগুলো রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দিতে হবে।
এই ধারণাটি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের জন্য বড় ধরনের হুমকি, এবং প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে পাশ কাটিয়ে একটি চুক্তি চাপিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) এই অবস্থানকে গভীর উদ্বেগের চোখে দেখছে এবং একটি বিকল্প শান্তিচুক্তির রূপরেখা বিবেচনা করছে, যাতে ইউক্রেনের পূর্ণ ভূখণ্ড রক্ষা পায়।
এই প্রস্তাব দ্বৈত ফলাফল আনতে পারে। একদিকে, যুদ্ধ থামানোর আকাঙ্ক্ষা; অন্যদিকে, এটি আন্তর্জাতিক নীতির বিপর্যয়কর দৃষ্টান্ত তৈরি করবে—যেখানে এক রাষ্ট্র তার ভূখণ্ড রক্ষায় সফল না হয়ে আগ্রাসনকারীকে পুরস্কৃত করছে। এটি শুধু ইউক্রেন নয়, পূর্ব ইউরোপের অন্যান্য দেশেও নিরাপত্তা-আতঙ্ক বাড়াবে।
ট্রাম্প অতীতেও ন্যাটো এবং ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে উত্তেজনাকর সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। তার “America First” নীতি ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষেত্রে মার্কিন নেতৃত্বের দায়িত্বশীলতা হ্রাস করতে পারে এবং এই অঞ্চলে রাশিয়ার প্রভাব বৃদ্ধির পথ সুগম করতে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা যতই “বাস্তববাদী” হোক, তা আন্তর্জাতিক ন্যায়ের বিপরীত, এবং ইউক্রেনের জন্য একটি ভীতিকর ভবিষ্যতের ইঙ্গিতবাহী। এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ইউরোপীয় নিরাপত্তা কাঠামোর উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।