
ফ্রান্সে বার্তাবাহক পায়রার ব্যবহার আজ আর নেই, তবে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ইতিহাসচর্চা আজও অব্যাহত। আলজেরিয়ার স্বাধীনতা যুদ্ধের পর, ১৯৬১ সালে ফরাসি সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে বার্তাবাহক পায়রার উপর নির্ভরতা বন্ধ করে দেয়, যা এক যুগের অবসান ঘটায়। কিন্তু এই বাহক পাখিরা হারায়নি ঐতিহাসিক সম্মান।
বর্তমানে ফ্রান্সে বাহক পায়রারা বিভিন্ন সামরিক অনুষ্ঠানে এবং স্মারক দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়—যার উদ্দেশ্য হলো উভয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী তাদের পূর্বসূরী পায়রাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো।
বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্তাবাহক পায়রা ছিল ফ্রান্সসহ বহু দেশের সেনাবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম। ধ্বংসপ্রাপ্ত রেডিও টাওয়ার, বিপদসঙ্কুল পরিবেশ কিংবা শত্রুপক্ষের নজর এড়িয়ে পায়রারা বহুবার গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছে দিয়ে সেনাদের জীবন বাঁচিয়েছে।
এই নিরব যোদ্ধারা প্রাণ দিয়েও দায়িত্বপালনে পিছপা হয়নি। অনেক পায়রা যুদ্ধকালীন সাহসিকতার জন্য পদক ও সম্মাননা পেয়েছে, যার রেকর্ড এখনো সংরক্ষিত ফ্রান্সের সামরিক ইতিহাসে।
ফ্রান্সের সামরিক ঐতিহ্যবাহী বিভাগগুলো এখনো প্রতীকী অনুষ্ঠানে পায়রাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। কোনো কোনো অনুষ্ঠানে ইতিহাস তুলে ধরার জন্য এমনকি পায়রার উড়ান প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়। এগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে এক ধরনের জীবন্ত পাঠ—যুদ্ধের ইতিহাস, আত্মত্যাগ আর ঐতিহ্যের মেলবন্ধন।
এভাবে আজও পায়রারা কেবল উড়ে বেড়ায় না, বরং ফরাসি জাতীয় স্মৃতিচারণার অংশ হয়ে বেঁচে থাকে, বহন করে ইতিহাসের এক অনবদ্য অধ্যায়।