২০২৫ সালের জুলাই মাসে সিরিয়ার উপর নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলার পেছনে রয়েছে একাধিক কৌশলগত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। এই হামলাগুলো শুধু সামরিক নয়, বরং আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা, নিরাপত্তা এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ঘিরে বিস্তৃত এক হিসাবের অংশ।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ায় একটি নতুন সরকার ক্ষমতায় আসে। ইসরায়েল আশঙ্কা করছে, এই সরকার যদি শক্তিশালী সামরিক সক্ষমতা অর্জন করে, তবে তা ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে নতুন নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করতে পারে।
ইসরায়েল বলছে, তারা সিরিয়ার সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য এই অভিযান চালাচ্ছে। যদিও বিশ্লেষকরা এটিকে রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের একটি কৌশল হিসেবে দেখছেন।
সর্বশেষ হামলাগুলোর একটি প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণ সিরিয়ায় সিরীয় সেনাবাহিনীর উপস্থিতির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি ও বাধা সৃষ্টি। ইসরায়েল গোলান হাইটস সংলগ্ন এলাকায় একটি “নন-মিলিটারি জোন” গঠনের চেষ্টা করছে, যেন ইসলামপন্থি গোষ্ঠী বা সিরীয় সামরিক শক্তি সেখানে ঘাঁটি গড়তে না পারে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েল সিরিয়ায় জাতিসংঘের বাফার জোন দখল করেছিল। এবার তারা দামেস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সামরিক সদর দপ্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে টার্গেট করে নিজেদের আগ্রাসন আরও প্রকট করেছে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সামাজিক মাধ্যমে বলেন, “দামেস্ককে সতর্ক করার সময় শেষ, এখন যন্ত্রণাদায়ক আঘাত করা হবে।” এই বক্তব্য ইঙ্গিত করে, ইসরায়েল সিরিয়াকে সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখছে এবং এখন কূটনৈতিক বার্তার বদলে সরাসরি সামরিক জবাব দিচ্ছে।
ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযান একদিকে দ্রুজদের সুরক্ষা এবং অন্যদিকে সিরিয়ার নতুন সরকারকে দুর্বল রাখা, ইসলামপন্থিদের প্রতিহত করা এবং গোলান হাইটসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কৌশল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এই হামলার বৈধতা ও নৈতিকতা নিয়ে বিতর্ক চলছেই।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।