১১:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভবিষ্যতে অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে মুখ খুলবে না যুক্তরাষ্ট্র:

বিদেশি কোনো দেশের পার্লামেন্ট নির্বাচন নিয়ে আর কোনো ধরনের মন্তব্য না করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মার্কিন দূতাবাসগুলোকে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। গতকাল ১৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক গোপন তারবার্তায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়। বার্তাটির একটি অনুলিপি পেয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

তারবার্তায় বলা হয়েছে, এখন থেকে বিদেশি কোনো দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি হয়নি—এই বিষয়ে মার্কিন দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত কিংবা ওয়াশিংটন থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট প্রকাশ করা হবে না। বরং নির্বাচনে বিজয়ী পক্ষকে যথাসময়ে অভিনন্দন জানানো এবং মার্কিন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বার্তায় আরও বলা হয়, কোনো নির্বাচনী প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক আদর্শ মেনে হয়েছে কিনা বা সেটি বৈধ কিনা— এসব বিষয়ে মার্কিন কূটনীতিকরা নিজেদের মতামত জানাতে পারবেন না। কোনো পক্ষ প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তাও এড়িয়ে যেতে হবে। এসব ক্ষেত্রে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্ররাই বিবৃতি দিতে পারবেন।

তবে কোনো দেশের নির্বাচন বা নির্বাচনী পরিবেশ যদি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির বাধ্যতামূলক স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয়, তাহলে বিশেষ অনুমোদনের ভিত্তিতে ওয়াশিংটন থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হতে পারে। তবে সেক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট দেশের মার্কিন দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত বা অন্যান্য কূটনীতিকদের কোনো প্রতিক্রিয়া না জানানোর নির্দেশ বহাল থাকবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পররাষ্ট্রনীতির বড় ধরনের পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত ১৩ মে সৌদি আরবের রিয়াদে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, “মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ যেভাবে তাদের নিজেদের ব্যাপারগুলো সামলাতে চায়— পারবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আর ‘নাক গলাবে’ না, বরং অংশীদারিত্ব জোরদার করতে মনোযোগী হবে।”

তারবার্তায় ট্রাম্পের ওই বক্তব্যকে রেফারেন্স হিসেবে তুলে ধরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র নিজের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধরে রাখলেও এখন থেকে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকবে। বরং সেসব দেশের সঙ্গে মার্কিন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে অংশীদারিত্ব গড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক ‘গণতন্ত্র রপ্তানির’ নীতি থেকে স্পষ্ট এক বিচ্যুতি, যার মাধ্যমে দেশটি এখন স্বার্থনির্ভর বাস্তববাদী পররাষ্ট্রনীতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

ভবিষ্যতে অন্য দেশের নির্বাচন নিয়ে মুখ খুলবে না যুক্তরাষ্ট্র:

প্রকাশিত হয়েছে: ০৫:০৫:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

বিদেশি কোনো দেশের পার্লামেন্ট নির্বাচন নিয়ে আর কোনো ধরনের মন্তব্য না করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মার্কিন দূতাবাসগুলোকে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। গতকাল ১৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক গোপন তারবার্তায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়। বার্তাটির একটি অনুলিপি পেয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

তারবার্তায় বলা হয়েছে, এখন থেকে বিদেশি কোনো দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি হয়নি—এই বিষয়ে মার্কিন দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত কিংবা ওয়াশিংটন থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট প্রকাশ করা হবে না। বরং নির্বাচনে বিজয়ী পক্ষকে যথাসময়ে অভিনন্দন জানানো এবং মার্কিন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বার্তায় আরও বলা হয়, কোনো নির্বাচনী প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক আদর্শ মেনে হয়েছে কিনা বা সেটি বৈধ কিনা— এসব বিষয়ে মার্কিন কূটনীতিকরা নিজেদের মতামত জানাতে পারবেন না। কোনো পক্ষ প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তাও এড়িয়ে যেতে হবে। এসব ক্ষেত্রে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্ররাই বিবৃতি দিতে পারবেন।

তবে কোনো দেশের নির্বাচন বা নির্বাচনী পরিবেশ যদি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির বাধ্যতামূলক স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয়, তাহলে বিশেষ অনুমোদনের ভিত্তিতে ওয়াশিংটন থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হতে পারে। তবে সেক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট দেশের মার্কিন দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত বা অন্যান্য কূটনীতিকদের কোনো প্রতিক্রিয়া না জানানোর নির্দেশ বহাল থাকবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পররাষ্ট্রনীতির বড় ধরনের পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত ১৩ মে সৌদি আরবের রিয়াদে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, “মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ যেভাবে তাদের নিজেদের ব্যাপারগুলো সামলাতে চায়— পারবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আর ‘নাক গলাবে’ না, বরং অংশীদারিত্ব জোরদার করতে মনোযোগী হবে।”

তারবার্তায় ট্রাম্পের ওই বক্তব্যকে রেফারেন্স হিসেবে তুলে ধরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র নিজের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধরে রাখলেও এখন থেকে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকবে। বরং সেসব দেশের সঙ্গে মার্কিন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে অংশীদারিত্ব গড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক ‘গণতন্ত্র রপ্তানির’ নীতি থেকে স্পষ্ট এক বিচ্যুতি, যার মাধ্যমে দেশটি এখন স্বার্থনির্ভর বাস্তববাদী পররাষ্ট্রনীতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।