১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়লেন জামায়াত আমির, সমাবেশে বললেন ‘লড়াই চলবে’

রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় দুইবার অসুস্থ হয়ে মঞ্চে পড়ে যান দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তার অসুস্থতার সময় দলীয় চিকিৎসকরা দ্রুত চিকিৎসা প্রদান করেন। মঞ্চেই বসে তিনি বক্তব্য চালিয়ে যান এবং বলেন, “আল্লাহ যত সময় হায়াত দিয়েছেন, ততক্ষণ লড়াই অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।”

সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান জোর দিয়ে বলেন, “মুক্তি অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চলবে। যদি মানুষের সেবা করার সুযোগ পাই, মালিক হব না, বরং সেবক হবো।” তিনি আশ্বাস দেন, জামায়াত ক্ষমতায় এলে কোনো সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী দুর্নীতিতে জড়াবে না, শুল্কমুক্ত গাড়ি বা প্লট নেবে না।

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “চাঁদা আমরা নেব না, দুর্নীতি আমরা সহ্য করবো না। যুবকদের বলছি, তোমাদের সঙ্গে আমরা আছি। আমি এখানে জামায়াতের আমির হয়ে কথা বলতে আসিনি, ১৮ কোটি মানুষের একজন হয়ে এসেছি।”

জাতীয় সমাবেশের সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “জামায়াত যদি ক্ষমতায় আসে, রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনকারীরা মালিক নয়, জনগণের সেবক হবে। এই দেশে যারা ক্ষমতায় গিয়ে জনগণের ঘাড়ে জুলুম করে, টেন্ডার-বাণিজ্যে জড়ায়, ফ্ল্যাট ভাগ করে নেয়– তারা জনগণের নয়, নিজেদের সেবায় ব্যস্ত।”

ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, “আমরা যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিই, তবে কারো বাড়ি বা প্লট নয়, বরং জনগণকে পাবলিক রিপোর্ট দেব—কে কী কাজ করল, কত টাকা খরচ হলো, জনগণ জানবে।”

দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শেষ হয়েছে, এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই সামনে। দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতেই হবে। জামায়াত এই সংগ্রামে ছিল, আছে এবং থাকবে। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য।”

বক্তব্যের শুরুতে তিনি জানান, সমাবেশের পথপরিক্রমায় তিনজন কর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করে তিনি তাদের পরিবারকে ধৈর্য ধরার তাওফিক দেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।

জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যারা একাত্তরে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছেন, তাদের অবদান ভুলে গেলে চলবে না। যারা অহংকার করে, সহযোদ্ধাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে, তারা মূলত ফ্যাসিবাদী মানসিকতার প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। এখন সময় ঐক্যের, বিভেদের নয়।”

সবশেষে তিনি জনগণের উদ্দেশে বলেন, “এই লড়াই শুধু জামায়াতের নয়, এই লড়াই সবার। নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাইলে, দায়িত্বশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতি চাইলে আসুন আমরা সবাই মিলে এগিয়ে যাই।”

ট্যাগ

মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়লেন জামায়াত আমির, সমাবেশে বললেন ‘লড়াই চলবে’

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:৪০:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় দুইবার অসুস্থ হয়ে মঞ্চে পড়ে যান দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তার অসুস্থতার সময় দলীয় চিকিৎসকরা দ্রুত চিকিৎসা প্রদান করেন। মঞ্চেই বসে তিনি বক্তব্য চালিয়ে যান এবং বলেন, “আল্লাহ যত সময় হায়াত দিয়েছেন, ততক্ষণ লড়াই অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।”

সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান জোর দিয়ে বলেন, “মুক্তি অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চলবে। যদি মানুষের সেবা করার সুযোগ পাই, মালিক হব না, বরং সেবক হবো।” তিনি আশ্বাস দেন, জামায়াত ক্ষমতায় এলে কোনো সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী দুর্নীতিতে জড়াবে না, শুল্কমুক্ত গাড়ি বা প্লট নেবে না।

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “চাঁদা আমরা নেব না, দুর্নীতি আমরা সহ্য করবো না। যুবকদের বলছি, তোমাদের সঙ্গে আমরা আছি। আমি এখানে জামায়াতের আমির হয়ে কথা বলতে আসিনি, ১৮ কোটি মানুষের একজন হয়ে এসেছি।”

জাতীয় সমাবেশের সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “জামায়াত যদি ক্ষমতায় আসে, রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনকারীরা মালিক নয়, জনগণের সেবক হবে। এই দেশে যারা ক্ষমতায় গিয়ে জনগণের ঘাড়ে জুলুম করে, টেন্ডার-বাণিজ্যে জড়ায়, ফ্ল্যাট ভাগ করে নেয়– তারা জনগণের নয়, নিজেদের সেবায় ব্যস্ত।”

ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, “আমরা যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিই, তবে কারো বাড়ি বা প্লট নয়, বরং জনগণকে পাবলিক রিপোর্ট দেব—কে কী কাজ করল, কত টাকা খরচ হলো, জনগণ জানবে।”

দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শেষ হয়েছে, এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই সামনে। দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতেই হবে। জামায়াত এই সংগ্রামে ছিল, আছে এবং থাকবে। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য।”

বক্তব্যের শুরুতে তিনি জানান, সমাবেশের পথপরিক্রমায় তিনজন কর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করে তিনি তাদের পরিবারকে ধৈর্য ধরার তাওফিক দেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।

জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যারা একাত্তরে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছেন, তাদের অবদান ভুলে গেলে চলবে না। যারা অহংকার করে, সহযোদ্ধাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে, তারা মূলত ফ্যাসিবাদী মানসিকতার প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। এখন সময় ঐক্যের, বিভেদের নয়।”

সবশেষে তিনি জনগণের উদ্দেশে বলেন, “এই লড়াই শুধু জামায়াতের নয়, এই লড়াই সবার। নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাইলে, দায়িত্বশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতি চাইলে আসুন আমরা সবাই মিলে এগিয়ে যাই।”