১১:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাশিয়ার সঙ্গে ফের আলোচনায় বসতে চায় ইউক্রেন,

ইউক্রেন আগামী সপ্তাহে রাশিয়ার সঙ্গে নতুন করে শান্তি আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে। রোববার (২০ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। গত মাসে আলোচনা থেমে যাওয়ার পর কিয়েভের পক্ষ থেকে এই কূটনৈতিক উদ্যোগ নতুন করে নেওয়া হলো।

শনিবার এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের প্রধান রুস্তেম উমেরভ রাশিয়ার সমকক্ষ কর্মকর্তাকে এই প্রস্তাব দিয়েছেন। জেলেনস্কি বলেন, “যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে যা যা করা দরকার, তা করতে হবে। রাশিয়াকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—আর লুকিয়ে থাকার সুযোগ নেই।” তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের আগ্রহও পুনর্ব্যক্ত করেন।

রাশিয়া এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। তবে আল জাজিরা জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়া রুস্তেম উমেরভ এর আগে তুরস্কে অনুষ্ঠিত দুই দফা শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনীয় দলের নেতৃত্ব দেন। সে সময় বন্দি ও মৃত সৈন্যদের বিনিময় ছাড়া কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি।

উল্লেখ্য, রাশিয়ার পক্ষ থেকে তখন ইউক্রেনকে চারটি অঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার দাবি এবং পশ্চিমা সামরিক সহায়তা প্রত্যাখ্যানের শর্ত দেওয়া হয়েছিল, যা কিয়েভের কাছে ছিল একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।

গত শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, শান্তি আলোচনায় গতি আনার বিষয়ে জেলেনস্কির বক্তব্যের সঙ্গে মস্কোরও একমত রয়েছে। বিশ্লেষকরা এটিকে রাশিয়ার অবস্থানে কৌশলগত নমনীয়তা হিসেবে দেখছেন, যেখানে পশ্চিমা চাপ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন হুমকির প্রভাবও কাজ করছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি মস্কোকে ৫০ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন যুদ্ধবিরতির জন্য। অন্যথায় রাশিয়ার রপ্তানি পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক এবং রুশ তেল ক্রেতাদের ওপর সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন। একইসঙ্গে ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র সরবরাহের আশ্বাসও দেন তিনি।

তবে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এই চাপকে “ওয়াশিংটনের ব্ল্যাকমেইল” বলে উল্লেখ করে বলেন, “এতে বোঝা যায় ইউক্রেন শান্তি নয়, যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়।”

এই পরিস্থিতিতে নতুন আলোচনার প্রস্তাব এসেছে এমন এক সময়, যখন যুদ্ধের ময়দানে সহিংসতা কমছে না। শনিবার ভোরে রাশিয়া ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা ও ছয়জনকে আহত করে।

জেলেনস্কি জানান, ওই রাতে রাশিয়া ইউক্রেনজুড়ে ৩০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৩০০ ড্রোন নিক্ষেপ করে। অন্যদিকে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার রোস্তভ অঞ্চলে একজন রেলকর্মী আহত হন এবং ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে চার ঘণ্টার জন্য।

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর আকাশেও ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রতিহত করা হয় বলে জানান মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন। এর ফলে ভনুকোভো ও ডোমোদেদোভো বিমানবন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়।

ট্যাগ

রাশিয়ার সঙ্গে ফের আলোচনায় বসতে চায় ইউক্রেন,

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:৪৭:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

ইউক্রেন আগামী সপ্তাহে রাশিয়ার সঙ্গে নতুন করে শান্তি আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে। রোববার (২০ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। গত মাসে আলোচনা থেমে যাওয়ার পর কিয়েভের পক্ষ থেকে এই কূটনৈতিক উদ্যোগ নতুন করে নেওয়া হলো।

শনিবার এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের প্রধান রুস্তেম উমেরভ রাশিয়ার সমকক্ষ কর্মকর্তাকে এই প্রস্তাব দিয়েছেন। জেলেনস্কি বলেন, “যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে যা যা করা দরকার, তা করতে হবে। রাশিয়াকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—আর লুকিয়ে থাকার সুযোগ নেই।” তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের আগ্রহও পুনর্ব্যক্ত করেন।

রাশিয়া এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। তবে আল জাজিরা জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়া রুস্তেম উমেরভ এর আগে তুরস্কে অনুষ্ঠিত দুই দফা শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনীয় দলের নেতৃত্ব দেন। সে সময় বন্দি ও মৃত সৈন্যদের বিনিময় ছাড়া কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি।

উল্লেখ্য, রাশিয়ার পক্ষ থেকে তখন ইউক্রেনকে চারটি অঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার দাবি এবং পশ্চিমা সামরিক সহায়তা প্রত্যাখ্যানের শর্ত দেওয়া হয়েছিল, যা কিয়েভের কাছে ছিল একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।

গত শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, শান্তি আলোচনায় গতি আনার বিষয়ে জেলেনস্কির বক্তব্যের সঙ্গে মস্কোরও একমত রয়েছে। বিশ্লেষকরা এটিকে রাশিয়ার অবস্থানে কৌশলগত নমনীয়তা হিসেবে দেখছেন, যেখানে পশ্চিমা চাপ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন হুমকির প্রভাবও কাজ করছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি মস্কোকে ৫০ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন যুদ্ধবিরতির জন্য। অন্যথায় রাশিয়ার রপ্তানি পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক এবং রুশ তেল ক্রেতাদের ওপর সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন। একইসঙ্গে ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র সরবরাহের আশ্বাসও দেন তিনি।

তবে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা এই চাপকে “ওয়াশিংটনের ব্ল্যাকমেইল” বলে উল্লেখ করে বলেন, “এতে বোঝা যায় ইউক্রেন শান্তি নয়, যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়।”

এই পরিস্থিতিতে নতুন আলোচনার প্রস্তাব এসেছে এমন এক সময়, যখন যুদ্ধের ময়দানে সহিংসতা কমছে না। শনিবার ভোরে রাশিয়া ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা ও ছয়জনকে আহত করে।

জেলেনস্কি জানান, ওই রাতে রাশিয়া ইউক্রেনজুড়ে ৩০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৩০০ ড্রোন নিক্ষেপ করে। অন্যদিকে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার রোস্তভ অঞ্চলে একজন রেলকর্মী আহত হন এবং ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে চার ঘণ্টার জন্য।

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর আকাশেও ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রতিহত করা হয় বলে জানান মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন। এর ফলে ভনুকোভো ও ডোমোদেদোভো বিমানবন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়।