
বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস এবং উৎসের বৈচিত্র্য আনতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকার-সরকার (জি-টু-জি) ভিত্তিতে ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮১৭ কোটি ৫৭ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫০ টাকা। বুধবার (২৩ জুলাই) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এর আগে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ও বিধিমালার আলোকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উত্থাপিত প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
এই গম আমদানির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হুইট অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান এগ্রোক্রপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড থেকে গম কেনা হবে। প্রতি মেট্রিক টনের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০২.৭৫ মার্কিন ডলার।
খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ৩০ জুন বাণিজ্য সচিব খাদ্য সচিবকে পাঠানো চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্ক বৃদ্ধি সম্পর্কে সতর্ক করেন। এতে বলা হয়, বর্তমানে বিদ্যমান ১৫.৫ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে আরও ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা বাংলাদেশের রপ্তানিকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে বাণিজ্য ভারসাম্য রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করে সরকার।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা গম আমদানিতে উৎসের বৈচিত্র্য আনতে চাই, কারণ অনেক সময় রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের গমের মান ভালো এবং এতে কিছুটা বেশি প্রোটিনও রয়েছে।”
শুল্ক আরোপের বিষয়ে তিনি জানান, আগামী ১ আগস্টের আগেই বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চাওয়া হবে। এ সময় তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, তারা শুল্ক কিছুটা কমাবে। কারণ, আমাদের মোট বাণিজ্য ঘাটতি মাত্র ৬.৫ বিলিয়ন ডলার।”
লবিস্ট নিয়োগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ ধরনের তাৎক্ষণিক নেগোশিয়েশনের জন্য লবিস্ট নয়, সরাসরি আলোচনাই কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি রয়েছে, যা এই আলোচনায় সহায়ক হবে।”
সরকার আশা করছে, এ পদক্ষেপে যেমন খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার হবে, তেমনি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কেও ভারসাম্য তৈরি হবে।