
উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডায় ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানলের ধোঁয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরসহ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ বায়ু দূষণজনিত স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে। একই সঙ্গে নিউ ইংল্যান্ডের কিছু অংশেও একই ধরনের সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ড, মেট্রো শহরাঞ্চল, লোয়ার হাডসন ভ্যালি, আপার হাডসন ভ্যালি এবং অ্যাডিরন্ড্যাকস এলাকাজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এসব অঞ্চলের বাতাস সংবেদনশীল মানুষের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, শনিবার নিউইয়র্কের বেশিরভাগ এলাকায় বায়ুমানের সূচক (AQI) ১০০ ছাড়িয়ে ১৩৫ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। AQI অনুযায়ী, সূচক যত বেশি হয়, বাতাস তত বেশি দূষিত হয় এবং তা মানবস্বাস্থ্যের জন্য ততই ঝুঁকিপূর্ণ। চলতি বছরের জুলাই মাসেই শিকাগোতেও একই ধরনের সতর্কতা জারি হয়েছিল, যেখানে শিশু ও বয়স্কদের জন্য বিশেষ সাবধানতার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এদিকে দাবানলের কারণে কানাডার বহু এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশজুড়ে ৫৫০টিরও বেশি দাবানল সক্রিয় রয়েছে, যার বড় অংশ ম্যানিটোবা প্রদেশে। শুধু মে ও জুন মাসেই সাস্কাচেওয়ান ও ম্যানিটোবা থেকে প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় প্রশাসন।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দাবানলের ঘটনা বাড়ছে। তাদের মতে, কানাডা বর্তমানে বৈশ্বিক গড় হারের দ্বিগুণ গতিতে উষ্ণ হচ্ছে, আর দেশটির আর্কটিক অঞ্চলগুলো গরম হচ্ছে তিন গুণ দ্রুত হারে। এর ফলেই দাবানলের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ক্রমেই বাড়ছে।
এই দাবানল কেবল পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা তৈরি করছে না, বরং এর প্রভাব রাজনীতিতেও ছড়িয়ে পড়েছে। জুলাইয়ের শুরুতে মার্কিন কংগ্রেসের ছয় সদস্য কানাডার রাষ্ট্রদূতের কাছে একটি চিঠি লিখে অভিযোগ করেন—দাবানলের ধোঁয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের গ্রীষ্মকালীন অবকাশ উপভোগ ব্যাহত হচ্ছে।