আল-মুহাইমিন (المهيمن) আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নামের একটি, যার অর্থ—তত্ত্বাবধায়ক, সর্বজ্ঞ রক্ষক ও নিরলস নজরদার। তিনি সবকিছুর ওপর নিয়ন্ত্রণকারী, যিনি সব জানেন, দেখেন এবং সংরক্ষণ করেন। তিনি কেবল সৃষ্টি করেননি, বরং প্রতিনিয়ত প্রতিটি সৃষ্টির দেখভাল করছেন নিরবিচারে।

পবিত্র কুরআনের সূরা আল-হাশর (৫৯:২৩)-এ বলা হয়েছে: “তিনি আল্লাহ—তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই; তিনি রাজাধিরাজ, পবিত্র, শান্তিদাতা, নিরাপত্তা দানকারী, তত্ত্বাবধায়ক...”। এ আয়াতে আল্লাহর নাম ‘আল-মুহাইমিন’ আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে তিনি বিশ্বজগতের অভিভাবক ও হিসাবরক্ষক।

আল্লাহর এই গুণ আমাদের বোঝায়, তিনি কেবল দুনিয়ার বড় বড় বিষয়ই দেখছেন না—বরং সবচেয়ে ক্ষুদ্র একটি দানাও তাঁর জ্ঞানের বাইরে নয়। আমাদের হৃদয়ের গোপন চিন্তা, নীরব কান্না, লুকানো দুঃখ—সবকিছুই তিনি জানেন। প্রতিটি মানুষের কাজ-কর্ম, ইচ্ছা ও আচরণ তিনি পর্যবেক্ষণ করেন।

যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে আল্লাহ আল-মুহাইমিন, সে কখনো একা বোধ করে না। কারণ সে জানে, একজন সর্বজ্ঞ, সর্বদর্শী রক্ষক তাকে দেখছেন, বুঝছেন ও আগলে রাখছেন। এই বিশ্বাস মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও আল্লাহভীতি জাগায়। পাপ থেকে বিরত রাখে, ন্যায়ের পথে অটল করে।

আমরা যেন আল-মুহাইমিন নামের তাৎপর্য অন্তরে ধারণ করি এবং প্রতিটি কাজের আগে ভাবি—“আল্লাহ তো দেখছেন”। জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্তে, সৎকর্মে ও ন্যায়ের পথে আল্লাহর উপর নির্ভর করাই প্রকৃত মুমিনের পরিচয়। আল্লাহর এই নাম আমাদেরকে এক আত্মিক নিরাপত্তা ও দৃঢ়তায় পূর্ণ করে তোলে।