
বাংলা সাহিত্যের দুই মহান পুরুষ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ সোসাইটি (SBS) এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ২৬ জুলাই ২০২৫ তারিখে সিঙ্গাপুরের নানিয়াং টেকনোলজিকাল ইউনিভার্সিটি (NTU)-র অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া মাইলস্টোন স্কুল ট্র্যাজেডির অকালপ্রয়াত শিশুদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন বলেন, “এই নীরবতা শুধু শোক প্রকাশ নয়, বরং আমাদের এক প্রতিজ্ঞা— ভবিষ্যতে যেন এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আর না ঘটে, তার জন্য আমরা সকলে সচেতন ও দায়িত্বশীল হব।”
সোসাইটির সভাপতি সানোয়ার ডিটো তাঁর বক্তব্যে বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল শুধু কবিই নন, তাঁরা আমাদের জাতিসত্তার প্রতীক। তাঁদের সাহিত্য ও সংগীত আজও মানবতা, সাম্য ও স্বাধীনতার বার্তা বহন করে। এই দুই কবির জয়ন্তী একসাথে উদযাপন করার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের জাতীয় ঐক্যের পরিচয় তুলে ধরতে চাই।”
অনুষ্ঠানে ছিল সিঙ্গাপুরের প্রথিতযশা শিল্পীদের কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত ও নজরুলগীতি, আবৃত্তি সংগঠন ‘কহন’-এর পরিবেশনায় কবিতার আবৃত্তি, রবীন্দ্র ও নজরুল রচনার উপর ভিত্তি করে নৃত্য পরিবেশনা, এবং SBS-CFA (Center for Arts)-এর শিশু ও কিশোর অংশগ্রহণকারীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা। দর্শকদের মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশি ছাড়াও স্থানীয় বাঙালি ও বিদেশি সংস্কৃতিপ্রেমীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনায় ছিলেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক তৌহিদা রহমান টিনা, যিনি মাযারুল আবেদীনকে সাথে নিয়ে সুন্দরভাবে পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। তাঁর সাবলীল উপস্থাপনা অনুষ্ঠানকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
এই আয়োজন প্রমাণ করেছে, প্রবাসে থেকেও বাংলা সংস্কৃতিকে ধারণ ও লালন করা সম্ভব। নতুন প্রজন্মের মাঝে সাহিত্য, সঙ্গীত ও সংস্কৃতির বীজ বপনের ক্ষেত্রে এ ধরনের অনুষ্ঠান এক উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে থাকবে। অনুষ্ঠান শেষে আগত দর্শকরা আয়োজকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং এমন আয়োজন নিয়মিত করার আহ্বান জানান।