
ক্রমবর্ধমান সীমান্ত সংঘাতের মধ্যে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে বৈঠকে বসেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দুই দেশ—থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। সোমবার (২৮ জুলাই) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এই আলোচনা শুরু হয়। টানা পাঁচ দিন ধরে চলা গোলাগুলি, কামান হামলা ও রকেট বর্ষণে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে দুই লাখের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সরকারি বাসভবন সেরি পেরদানায় এদিন দুপুরে পৌঁছান থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই এবং কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত। আলোচনা চলাকালীন সময়ে আকাশে দেখা যায় নিরাপত্তাব্যবস্থায় নিয়োজিত বিমান। বৈঠকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন ও চীনা প্রতিনিধিরা। গাড়িবহরে উভয় দেশের পতাকার পাশাপাশি দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পতাকাবাহী গাড়িও।
আলোচনার কয়েক ঘণ্টা আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তিনি জানান, উভয় পক্ষ শান্তিপূর্ণ সমাধানের বিষয়ে আগ্রহী। ট্রাম্প বলেন, “যুদ্ধবিরতি এখন জরুরি, এবং দুই দেশ এ বিষয়ে সহমত পোষণ করেছে।”
আলোচনা শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে সীমান্তে ফের গোলাবিনিময়ের খবর পাওয়া গেছে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম অভিযোগ করে বলেন, “কম্বোডিয়া শান্তির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, কিন্তু আচরণে তার বিপরীত। আমরা তাদের সদিচ্ছা নিয়ে সন্দিহান।”
অন্যদিকে, কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সোচেতা বলেন, “সোমবার পঞ্চম দিনের মতো থাই সেনারা ভারী অস্ত্র ও বিপুল সংখ্যক সৈন্য নিয়ে আমাদের ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে। এটি একতরফা আগ্রাসনের পরিচয়।”
মালয়েশিয়া বর্তমানে আঞ্চলিক সংস্থা আসিয়ানের চেয়ারম্যান দেশ। সংঘাতের শুরুতেই আনোয়ার ইব্রাহিম যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেন। সোমবারের আলোচনা থেকে কোনো তাৎক্ষণিক সমাধান না আসলেও আলোচনার শুরুটিকে অনেকেই আশাব্যঞ্জক হিসেবে দেখছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে থাকছে আন্তর্জাতিক মহল।