
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় শাসনক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে এবং অস্ত্র সমর্পণের জন্য সরাসরি আহ্বান জানিয়েছে কাতার, সৌদি আরব, মিসরসহ আরব বিশ্বের ১৭টি দেশ। এই ঐতিহাসিক ৭ পৃষ্ঠার যৌথ বিবৃতিকে সমর্থন জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) ও আরব লীগ (AL)। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধ অবসান এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হামাসকে সরে দাঁড়াতে হবে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করতে হবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল অভিযানের নিন্দাও রয়েছে এই বিবৃতিতে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই হামলা নিয়ে এখনো কোনো নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপিত না হলেও, এটিই প্রথমবারের মতো আরব রাষ্ট্রগুলোর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হামাসের ওই হামলার সমালোচনা করা হলো।
এই বিবৃতি এসেছে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনের পরিপ্রেক্ষিতে, যেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সম্মেলনে চেয়ারের দায়িত্ব পালন করেন সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রী ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
ম্যাক্রোঁর ঘোষণায় নতুন মাত্রা:
উল্লেখযোগ্যভাবে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, আগামী সেপ্টেম্বরে ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। এটি ইউরোপে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতির একটি নতুন ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাব:
জাতিসংঘে ফিলিস্তিন মিশনও একটি বিবৃতিতে গাজায় স্থায়ী শান্তির স্বার্থে হামাস ও ইসরায়েল—উভয় পক্ষকেই গাজা থেকে বিদায় নেওয়ার আহ্বান জানায়। সেখানে গাজার প্রশাসনিক দায়িত্ব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে ন্যস্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া:
এই বিবৃতিকে ‘ঐতিহাসিক’ ও ‘অভূতপূর্ব’ বলে উল্লেখ করেছেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেন নোয়েল ব্যারট। তিনি বলেন, “এই প্রথম আরব বিশ্ব একসঙ্গে হামাসের সমালোচনা করল এবং শান্তিপূর্ণ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য গঠনমূলক অবস্থান নিল।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঐক্যবদ্ধ বিবৃতি এবং ইউরোপীয় শক্তির সমর্থন ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্য সংকট সমাধানে এক নতুন কূটনৈতিক চাপ তৈরি করবে, যা হামাসের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে।