ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেছেন, ভারতের জাতীয় স্বার্থ ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য নয়াদিল্লি বাংলাদেশের প্রতি বিশেষ মনোযোগী এবং নিবিড়ভাবে নজর রাখছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভারতের লোকসভার বর্ষাকালীন অধিবেশনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
অধিবেশনে বিজেপির এক সংসদ সদস্য জয়শঙ্করের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামের একটি ইসলামপন্থি গোষ্ঠী ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশ করেছে। উক্ত মানচিত্রে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরাসহ কয়েকটি রাজ্যকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। তিনি আরও দাবি করেন, এই গোষ্ঠী তুরস্কভিত্তিক এনজিও ‘তার্কিশ ইউথ ফেডারেশন’-এর সহায়তায় কাজ করছে।
জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর জানান, এই ইস্যুতে ভারত বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বাংলাদেশ জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি ঐতিহাসিক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে মধ্যযুগীয় বাংলার একটি মানচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ব্যবহৃত হয়।
জয়শঙ্কর বলেন, “বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে যে, ওই আয়োজকদের কোনো বিদেশি সংস্থা বা এনজিওর সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। এ ছাড়া ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামের কোনো সংগঠন বাংলাদেশে আছে বলেও সরকার অবগত নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে বরাবরই বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিয়ে দেখি। ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখা হচ্ছে।”
ভারতের এই মন্তব্য নতুন করে দিল্লি-ঢাকা সম্পর্কে ‘আস্থা বনাম শঙ্কা’র দ্বন্দ্বকে সামনে নিয়ে এসেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের দূরবর্তী সম্পর্ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড নিয়ে নয়াদিল্লির সতর্কতা ভবিষ্যতের কূটনৈতিক আবহে প্রভাব ফেলতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।