১০:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দৃঢ়ভাবে এগোচ্ছে: ইউনূস

জুলাই-আগস্ট গণ-আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

বিচার হচ্ছে স্বচ্ছ ও দৃশ্যমান

ভাষণে ইউনূস বলেন, “এই বিচার এ দেশের মাটিতেই হবেই। ইতিহাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞে যারা জড়িত, তাদের বিচারের আনুষ্ঠানিক শুনানি পর্ব শুরু হয়েছে। প্রক্রিয়া এবং ফলাফল জনগণের সামনে স্বচ্ছভাবে উপস্থাপন করা হবে।”

তিনি জানান, বিচারকাজ ধাপে ধাপে দেশবাসীর সামনে উন্মুক্ত থাকবে এবং এর প্রতিটি ধাপ যেন জনগণ বুঝতে পারেন সে জন্য প্রয়োজনীয় স্বচ্ছতা বজায় রাখা হচ্ছে।

ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র মেরামতের শপথ

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে এক সংকটময় মুহূর্তে— যখন দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসপ্রাপ্ত ছিল।
তিনি বলেন, “আমাদের প্রাথমিক কাজ ছিল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার ও পুনর্গঠন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুনর্গঠন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, আইন-আদালত ও নির্বাচন কমিশনকে সচল করে নাগরিকদের আস্থা ফিরিয়ে আনা— এ ছিল আমাদের অগ্রাধিকার।”

জুলাইয়ের রক্তাক্ত স্মৃতি এবং স্বৈরশাসনের প্রতিচ্ছবি

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “রক্তাক্ত জুলাই ছিল স্বৈরাচারবিরোধী তরুণদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ। ১৬ বছরের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনগুলো দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে। আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার জন্য কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অংশ নিতে বলা হয়েছে, আবার কখনো বলা হয়েছে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে।”

তিনি এসব হামলার বিচারকেই বর্তমান সময়ের অন্যতম নৈতিক ও রাজনৈতিক কর্তব্য হিসেবে দেখছেন।

বিচার বিভাগের সংস্কার প্রায় সম্পন্ন

ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “স্বাধীন ও কার্যকর বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকার একটি ব্যাপক সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগসহ অনেক কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।”

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই সংস্কার কর্মসূচি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘমেয়াদে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দৃঢ়ভাবে এগোচ্ছে: ইউনূস

প্রকাশিত হয়েছে: ০৯:৪৪:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫

জুলাই-আগস্ট গণ-আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

বিচার হচ্ছে স্বচ্ছ ও দৃশ্যমান

ভাষণে ইউনূস বলেন, “এই বিচার এ দেশের মাটিতেই হবেই। ইতিহাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞে যারা জড়িত, তাদের বিচারের আনুষ্ঠানিক শুনানি পর্ব শুরু হয়েছে। প্রক্রিয়া এবং ফলাফল জনগণের সামনে স্বচ্ছভাবে উপস্থাপন করা হবে।”

তিনি জানান, বিচারকাজ ধাপে ধাপে দেশবাসীর সামনে উন্মুক্ত থাকবে এবং এর প্রতিটি ধাপ যেন জনগণ বুঝতে পারেন সে জন্য প্রয়োজনীয় স্বচ্ছতা বজায় রাখা হচ্ছে।

ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র মেরামতের শপথ

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে এক সংকটময় মুহূর্তে— যখন দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসপ্রাপ্ত ছিল।
তিনি বলেন, “আমাদের প্রাথমিক কাজ ছিল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার ও পুনর্গঠন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুনর্গঠন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, আইন-আদালত ও নির্বাচন কমিশনকে সচল করে নাগরিকদের আস্থা ফিরিয়ে আনা— এ ছিল আমাদের অগ্রাধিকার।”

জুলাইয়ের রক্তাক্ত স্মৃতি এবং স্বৈরশাসনের প্রতিচ্ছবি

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “রক্তাক্ত জুলাই ছিল স্বৈরাচারবিরোধী তরুণদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ। ১৬ বছরের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনগুলো দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে বারবার রক্তাক্ত হয়েছে। আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার জন্য কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অংশ নিতে বলা হয়েছে, আবার কখনো বলা হয়েছে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে।”

তিনি এসব হামলার বিচারকেই বর্তমান সময়ের অন্যতম নৈতিক ও রাজনৈতিক কর্তব্য হিসেবে দেখছেন।

বিচার বিভাগের সংস্কার প্রায় সম্পন্ন

ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “স্বাধীন ও কার্যকর বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকার একটি ব্যাপক সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগসহ অনেক কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।”

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই সংস্কার কর্মসূচি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘমেয়াদে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে।