০৮:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই ধ্বংস হয়ে গেছে ধারালী গ্রাম।

উত্তরাখণ্ড রাজ্যের উত্তরকাশী জেলার হর্ষিল উপত্যকার ধারালী গ্রামে ভয়ংকর হড়পা বান ও আকস্মিক বন্যায় মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা একটি শান্ত, পর্যটননির্ভর জনপদ। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ভোররাতে এই বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে।

১২,৬০০ ফুট উচ্চতায় হঠাৎ করে প্রবল বৃষ্টিপাতের পর পাহাড়ি ঢাল বেয়ে নেমে আসা জলরাশিতে সৃষ্টি হয় হড়পা বান। সেই স্রোতের সঙ্গে নেমে আসে পাথর, বোল্ডার ও প্রচুর কাদা। মুহূর্তেই গ্রামজুড়ে ধ্বংসের চিত্র। একের পর এক বাড়ি, হোটেল, রেস্তোরাঁ, হোমস্টে ধসে পড়ে, কেউ কেউ নিখোঁজ, কেউ কেউ আহত – গোটা এলাকা যেন এক মৃত্যুপুরী।

ধারালী গ্রামটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য খ্যাত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৯০০৫ ফুট উঁচুতে অবস্থিত এই জনপদের অবস্থান গঙ্গোত্রী যাওয়ার পথে, হর্ষিল থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে। ভারতের সেনাবাহিনী ও পর্যটকদের জন্য ব্যবহৃত হর্ষিল হেলিপ্যাড, ধারালী গ্রাম এবং কল্প কেদার মন্দির — সবকিছুই এই হড়পা বানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ধারালী নয়, পার্শ্ববর্তী সুখী টপ এলাকাতেও ভারী বৃষ্টি হয়। ফলে পরপর দুই দফা বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। পাহাড় থেকে নেমে আসা ক্ষীরগঙ্গার স্রোত বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বন্যার গতিপথ বদলে দেয়। সৃষ্ট বোল্ডার ও কাদার স্রোত ভাগীরথী নদীর প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে, যার ফলে নদীর পাশে এক অস্থায়ী হ্রদের সৃষ্টি হয় — যা ভবিষ্যতের জন্য আরও ভয়ংকর বিপদের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

জানা গেছে, হড়পা বানের কারণে প্রায় ১৩.৫ একর এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সেনা ছাউনির একাংশ, হেলিপ্যাডের অবকাঠামো এবং বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ধারালী গ্রামে ১৩৭টি পরিবারের বসবাস ছিল, মোট জনসংখ্যা ৫৮৩ জন। স্থানীয় প্রশাসন, এনডিআরএফ, সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে। তবে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ও প্রবল বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই ধ্বংস হয়ে গেছে ধারালী গ্রাম।

প্রকাশিত হয়েছে: ১২:২৪:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

উত্তরাখণ্ড রাজ্যের উত্তরকাশী জেলার হর্ষিল উপত্যকার ধারালী গ্রামে ভয়ংকর হড়পা বান ও আকস্মিক বন্যায় মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা একটি শান্ত, পর্যটননির্ভর জনপদ। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ভোররাতে এই বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে।

১২,৬০০ ফুট উচ্চতায় হঠাৎ করে প্রবল বৃষ্টিপাতের পর পাহাড়ি ঢাল বেয়ে নেমে আসা জলরাশিতে সৃষ্টি হয় হড়পা বান। সেই স্রোতের সঙ্গে নেমে আসে পাথর, বোল্ডার ও প্রচুর কাদা। মুহূর্তেই গ্রামজুড়ে ধ্বংসের চিত্র। একের পর এক বাড়ি, হোটেল, রেস্তোরাঁ, হোমস্টে ধসে পড়ে, কেউ কেউ নিখোঁজ, কেউ কেউ আহত – গোটা এলাকা যেন এক মৃত্যুপুরী।

ধারালী গ্রামটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য খ্যাত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৯০০৫ ফুট উঁচুতে অবস্থিত এই জনপদের অবস্থান গঙ্গোত্রী যাওয়ার পথে, হর্ষিল থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে। ভারতের সেনাবাহিনী ও পর্যটকদের জন্য ব্যবহৃত হর্ষিল হেলিপ্যাড, ধারালী গ্রাম এবং কল্প কেদার মন্দির — সবকিছুই এই হড়পা বানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ধারালী নয়, পার্শ্ববর্তী সুখী টপ এলাকাতেও ভারী বৃষ্টি হয়। ফলে পরপর দুই দফা বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। পাহাড় থেকে নেমে আসা ক্ষীরগঙ্গার স্রোত বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বন্যার গতিপথ বদলে দেয়। সৃষ্ট বোল্ডার ও কাদার স্রোত ভাগীরথী নদীর প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে, যার ফলে নদীর পাশে এক অস্থায়ী হ্রদের সৃষ্টি হয় — যা ভবিষ্যতের জন্য আরও ভয়ংকর বিপদের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

জানা গেছে, হড়পা বানের কারণে প্রায় ১৩.৫ একর এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সেনা ছাউনির একাংশ, হেলিপ্যাডের অবকাঠামো এবং বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ধারালী গ্রামে ১৩৭টি পরিবারের বসবাস ছিল, মোট জনসংখ্যা ৫৮৩ জন। স্থানীয় প্রশাসন, এনডিআরএফ, সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে। তবে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ও প্রবল বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।