১২:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নেতানিয়াহুর গাজা পুনর্দখলের প্রস্তাব নিয়ে তীব্র বিতর্ক

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকা পুরোপুরি পুনর্দখলের প্রস্তাব দিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম। আগামী দিনে নিরাপত্তা ক্যাবিনেটের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ প্রস্তাব আনবেন।

স্থানীয় সাংবাদিকদের উদ্ধৃত করে বিবিসি জানায়, এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, “নির্ধারিত হয়ে গেছে— আমরা গাজা পুরোপুরি দখল করব এবং হামাসকে পরাজিত করব।” তবে সেনাবাহিনীপ্রধানসহ ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারা এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন। কর্মকর্তাটি স্পষ্টভাবে বলেন, “সেনাপ্রধানের যদি এটা পছন্দ না হয়, তাহলে তার পদত্যাগ করা উচিত।”

এদিকে, গাজায় আটক বন্দিদের পরিবারের মধ্যে এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, গাজায় আটক ৫০ জন ইসরায়েলির মধ্যে মাত্র ২০ জন জীবিত আছেন। জরিপ বলছে, প্রতি চারজন ইসরায়েলির মধ্যে তিনজন যুদ্ধবিরতির পক্ষে— যাতে বন্দি বিনিময় সম্ভব হয়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপ হয়তো হামাসের ওপর চাপ তৈরির কৌশল হতে পারে। সম্প্রতি হামাস তিনটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায় দুই ইসরায়েলি বন্দি — রোম ব্লাস্লাভস্কি ও এভিয়াতার ডেভিড — দুর্বল অবস্থায় আছেন। ভিডিওতে ডেভিডকে একটি টানেলের মধ্যে নিজের কবর খুঁড়তে দেখা গেছে।

নেতানিয়াহুর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন দেশটির সাবেক গোয়েন্দা প্রধানরা। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পাঠানো এক চিঠিতে শতাধিক সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। শিন বেতের সাবেক প্রধান আমি আয়ালন বলেন, “সামরিকভাবে হামাস ধ্বংস হলেও আদর্শিকভাবে এটি আরও শক্তিশালী হচ্ছে মুসলিম বিশ্বে।”

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা গাজার ৭৫ শতাংশ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। তবে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা অনুযায়ী এবার লক্ষ্য পুরো গাজা পুনর্দখল। বর্তমানে গাজায় ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস করেন, যাদের ৯০ শতাংশই বাস্তুচ্যুত এবং চরম মানবিক সংকটে আছেন।

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা বলছে, ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। ফলে, পুনর্দখলের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ হতে পারে— এমনটাই আশঙ্কা আন্তর্জাতিক মহলের।

ট্যাগ

নেতানিয়াহুর গাজা পুনর্দখলের প্রস্তাব নিয়ে তীব্র বিতর্ক

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:৩৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকা পুরোপুরি পুনর্দখলের প্রস্তাব দিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম। আগামী দিনে নিরাপত্তা ক্যাবিনেটের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ প্রস্তাব আনবেন।

স্থানীয় সাংবাদিকদের উদ্ধৃত করে বিবিসি জানায়, এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, “নির্ধারিত হয়ে গেছে— আমরা গাজা পুরোপুরি দখল করব এবং হামাসকে পরাজিত করব।” তবে সেনাবাহিনীপ্রধানসহ ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারা এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন। কর্মকর্তাটি স্পষ্টভাবে বলেন, “সেনাপ্রধানের যদি এটা পছন্দ না হয়, তাহলে তার পদত্যাগ করা উচিত।”

এদিকে, গাজায় আটক বন্দিদের পরিবারের মধ্যে এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, গাজায় আটক ৫০ জন ইসরায়েলির মধ্যে মাত্র ২০ জন জীবিত আছেন। জরিপ বলছে, প্রতি চারজন ইসরায়েলির মধ্যে তিনজন যুদ্ধবিরতির পক্ষে— যাতে বন্দি বিনিময় সম্ভব হয়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপ হয়তো হামাসের ওপর চাপ তৈরির কৌশল হতে পারে। সম্প্রতি হামাস তিনটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায় দুই ইসরায়েলি বন্দি — রোম ব্লাস্লাভস্কি ও এভিয়াতার ডেভিড — দুর্বল অবস্থায় আছেন। ভিডিওতে ডেভিডকে একটি টানেলের মধ্যে নিজের কবর খুঁড়তে দেখা গেছে।

নেতানিয়াহুর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন দেশটির সাবেক গোয়েন্দা প্রধানরা। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পাঠানো এক চিঠিতে শতাধিক সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। শিন বেতের সাবেক প্রধান আমি আয়ালন বলেন, “সামরিকভাবে হামাস ধ্বংস হলেও আদর্শিকভাবে এটি আরও শক্তিশালী হচ্ছে মুসলিম বিশ্বে।”

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা গাজার ৭৫ শতাংশ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। তবে নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা অনুযায়ী এবার লক্ষ্য পুরো গাজা পুনর্দখল। বর্তমানে গাজায় ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস করেন, যাদের ৯০ শতাংশই বাস্তুচ্যুত এবং চরম মানবিক সংকটে আছেন।

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা বলছে, ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। ফলে, পুনর্দখলের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ হতে পারে— এমনটাই আশঙ্কা আন্তর্জাতিক মহলের।