০৭:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জামায়াত-এনসিপি দাবি, জুলাই সনদে আইনি রূপ দেওয়া জরুরি

গত বছরের ৮ই আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনার জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ মোট ১১টি কমিশন গঠন করা হয়। এসব কমিশন রাষ্ট্রীয় সংস্কারের জন্য বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরে, যেগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক চালাচ্ছে।

এই প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোকে একত্র করে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ তৈরির পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক দলের মধ্যে সকল প্রস্তাবনায় একমত না হওয়ায় এখনও পর্যন্ত সনদ চূড়ান্ত হয়নি। খসড়া অনুযায়ী, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন হওয়ার পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দলগুলো এই সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করবে।

বিএনপি এই দুই বছরের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের ব্যাপারে আপত্তি না জানালেও জামায়াত ও এনসিপি এই প্রক্রিয়া অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাস্তবায়নের দাবি করছে। তারা বলছে, নির্বাচন হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট দলগুলো পরবর্তীতে সংস্কার বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, এ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তাই জুলাই সনদকে একটি আইনি ভিত্তি দিতে হবে যাতে তা বাধ্যতামূলক হয়।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, “যেসব বিষয়ে সবাই একমত, সেগুলো জাতির সামনে ঘোষণা করে নির্বাচনের আগে সনদে স্বাক্ষর করিয়ে আইনি রূপ দেওয়া উচিত।” এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীবও একই দাবি জানান, “নির্বাচনের আগে সনদকে আইনি, সাংবিধানিক ভিত্তিতে রূপান্তর করে সেই অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে।”

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “স্বাক্ষর করার জন্য সকল দল একমত। তবে আইনি ও বাস্তবায়ন বিষয়ক প্রশ্ন নির্ধারণ না হলে স্বাক্ষরের বিষয়ে চিন্তা হবে।” তিনি আরও বলেন, সাংবিধানিক সংশোধনী বাদে অন্যান্য সংস্কার প্রস্তাব এই সরকারের সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন সম্ভব। এজন্য আইন সংশোধনী, অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কাজ হচ্ছে। সাংবিধানিক সংশোধনীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ফোরাম জাতীয় সংসদ।

এ কারণে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে যা এখনো সমাধান হয়নি। এর ফলে দেশের রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জামায়াত-এনসিপি দাবি, জুলাই সনদে আইনি রূপ দেওয়া জরুরি

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:৫৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

গত বছরের ৮ই আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনার জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ মোট ১১টি কমিশন গঠন করা হয়। এসব কমিশন রাষ্ট্রীয় সংস্কারের জন্য বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরে, যেগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক চালাচ্ছে।

এই প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোকে একত্র করে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ তৈরির পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক দলের মধ্যে সকল প্রস্তাবনায় একমত না হওয়ায় এখনও পর্যন্ত সনদ চূড়ান্ত হয়নি। খসড়া অনুযায়ী, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন হওয়ার পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দলগুলো এই সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করবে।

বিএনপি এই দুই বছরের মধ্যে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের ব্যাপারে আপত্তি না জানালেও জামায়াত ও এনসিপি এই প্রক্রিয়া অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাস্তবায়নের দাবি করছে। তারা বলছে, নির্বাচন হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট দলগুলো পরবর্তীতে সংস্কার বাস্তবায়ন না করলে কী হবে, এ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তাই জুলাই সনদকে একটি আইনি ভিত্তি দিতে হবে যাতে তা বাধ্যতামূলক হয়।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, “যেসব বিষয়ে সবাই একমত, সেগুলো জাতির সামনে ঘোষণা করে নির্বাচনের আগে সনদে স্বাক্ষর করিয়ে আইনি রূপ দেওয়া উচিত।” এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীবও একই দাবি জানান, “নির্বাচনের আগে সনদকে আইনি, সাংবিধানিক ভিত্তিতে রূপান্তর করে সেই অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে।”

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “স্বাক্ষর করার জন্য সকল দল একমত। তবে আইনি ও বাস্তবায়ন বিষয়ক প্রশ্ন নির্ধারণ না হলে স্বাক্ষরের বিষয়ে চিন্তা হবে।” তিনি আরও বলেন, সাংবিধানিক সংশোধনী বাদে অন্যান্য সংস্কার প্রস্তাব এই সরকারের সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন সম্ভব। এজন্য আইন সংশোধনী, অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কাজ হচ্ছে। সাংবিধানিক সংশোধনীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ফোরাম জাতীয় সংসদ।

এ কারণে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে যা এখনো সমাধান হয়নি। এর ফলে দেশের রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।