১২:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনী নিরপেক্ষতার শপথ, মাঠপর্যায়ে কড়া নির্দেশনা ডিএমপির

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার পর শুরু হয়েছে নির্বাচনী ডামাডোল। অতীতের বিতর্কিত অভিজ্ঞতা পেছনে ফেলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। সোমবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ডিএমপির জুলাই-২০২৫ মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর দেশে সুন্দর একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে যেখানে বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা উপস্থিত থাকবেন। পুলিশ বাহিনীর মান-মর্যাদা পুনরুদ্ধারে নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে হবে। নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মহানগর এলাকায় পর্যাপ্ত জনবল মোতায়েন থাকবে। সভায় উপস্থিত এক উপকমিশনার জানান, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে কমান্ডিং পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের ভূমিকা ছিল বিতর্কিত, যা পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সাম্প্রতিক ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার ও সরকারি দল যেভাবে পুলিশকে ব্যবহার করেছে সেটি হতাশাজনক ও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। এই প্রেক্ষাপটে ডিএমপিকে নিরপেক্ষ থেকে দায়িত্ব পালনের জন্য বিশদ আলোচনা হয়। কমিশনার রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিরাপত্তামূলক পরিকল্পনায় সাব-ইউনিটগুলোকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন। ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন জানান, এবারের নির্বাচনে পুলিশকে নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে, সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে সক্ষমতা বৃদ্ধি, লজিস্টিক সাপোর্ট, জনবল ও প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার বলেন, অতীত বিবেচনায় কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে—নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্বে কোনো আপস নয়। ডিএমপির গোয়েন্দা রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. ইলিয়াস কবির জানান, বিগত নির্বাচনের মতো যেন কারচুপি ও বলপ্রয়োগে পুলিশের কোনো যোগাযোগ না থাকে, সেজন্য ভোটকেন্দ্রভিত্তিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সভায় কমিশনার আরও বলেন, জনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই, অপরাধ আগাম শনাক্ত করে নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। মোটরসাইকেল ব্যবহার করে অপরাধ বৃদ্ধির বিষয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে কাগজপত্রবিহীন মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ সিআইএমএস সিস্টেমের তথ্য নিয়মিত আপডেট ও তদন্তে নির্ধারিত সময় মেনে চলার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন। সভায় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগ

নির্বাচনী নিরপেক্ষতার শপথ, মাঠপর্যায়ে কড়া নির্দেশনা ডিএমপির

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:৪৫:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার পর শুরু হয়েছে নির্বাচনী ডামাডোল। অতীতের বিতর্কিত অভিজ্ঞতা পেছনে ফেলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। সোমবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ডিএমপির জুলাই-২০২৫ মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর দেশে সুন্দর একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে যেখানে বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা উপস্থিত থাকবেন। পুলিশ বাহিনীর মান-মর্যাদা পুনরুদ্ধারে নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে হবে। নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মহানগর এলাকায় পর্যাপ্ত জনবল মোতায়েন থাকবে। সভায় উপস্থিত এক উপকমিশনার জানান, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে কমান্ডিং পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের ভূমিকা ছিল বিতর্কিত, যা পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সাম্প্রতিক ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার ও সরকারি দল যেভাবে পুলিশকে ব্যবহার করেছে সেটি হতাশাজনক ও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। এই প্রেক্ষাপটে ডিএমপিকে নিরপেক্ষ থেকে দায়িত্ব পালনের জন্য বিশদ আলোচনা হয়। কমিশনার রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিরাপত্তামূলক পরিকল্পনায় সাব-ইউনিটগুলোকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন। ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন জানান, এবারের নির্বাচনে পুলিশকে নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে, সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে সক্ষমতা বৃদ্ধি, লজিস্টিক সাপোর্ট, জনবল ও প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার বলেন, অতীত বিবেচনায় কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে—নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্বে কোনো আপস নয়। ডিএমপির গোয়েন্দা রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. ইলিয়াস কবির জানান, বিগত নির্বাচনের মতো যেন কারচুপি ও বলপ্রয়োগে পুলিশের কোনো যোগাযোগ না থাকে, সেজন্য ভোটকেন্দ্রভিত্তিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সভায় কমিশনার আরও বলেন, জনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই, অপরাধ আগাম শনাক্ত করে নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। মোটরসাইকেল ব্যবহার করে অপরাধ বৃদ্ধির বিষয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে কাগজপত্রবিহীন মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ সিআইএমএস সিস্টেমের তথ্য নিয়মিত আপডেট ও তদন্তে নির্ধারিত সময় মেনে চলার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন। সভায় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।