আল্লাহর বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে দীর্ঘ দিন কষ্ট সয়েছেন হজরত নুহ (আ.) ও হজরত লুত (আ.)। কিন্তু তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সঠিক পথের দিশা পেয়েছিল অনেকে, তবু সত্য থেকে দূরে ছিলেন এই দুই নবীর স্ত্রী। তারা নবুয়তের ওপর ঈমান আনেনি, বরং মুনাফিকী ও কপটতায় লিপ্ত ছিল এবং নিজেদের কাফের জাতির প্রতি সমর্থন পোষণ করত। হজরত নুহ (আ.)-এর স্ত্রী তার স্বামীর বিরুদ্ধাচরণ করত, তাকে পাগল বলত এবং গোপন তথ্য কাফেরদের কাছে ফাঁস করে দিত। অবাধ্যতার কারণে আল্লাহ তায়ালা নুহ (আ.)-এর জাতিকে প্লাবনের মাধ্যমে ধ্বংস করেন, আর এই মহাপ্লাবনের আজাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন নুহ (আ.)-এর অবাধ্য স্ত্রী ও ছেলে। একইভাবে হজরত লুত (আ.)-এর স্ত্রীও ছিলেন অবাধ্য ও বিশ্বাসঘাতক, যিনি তার শত্রুদের সহায়তা করতেন। লুত (আ.)-এর সম্প্রদায়ের পাপাচার, প্রবৃত্তিপূজা ও অপকর্মে সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল, এমনকি তারা এমন পাপ করত যা ইতিহাসে আগে কেউ করেনি এবং যা জন্তু-জানোয়ারও ঘৃণা করে। ফলে আকাশ থেকে তাদের ওপর পাথরের বৃষ্টি নেমে আসে এবং সেই শাস্তিতে লুত (আ.)-এর স্ত্রীও ধ্বংস হয়। পবিত্র কোরআনের সুরা তাহরীমের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাদের সম্পর্কে বলেন—“আল্লাহ কাফেরদের জন্য নুহের স্ত্রী ও লুতের স্ত্রীকে দৃষ্টান্ত হিসাবে পেশ করেছেন। তারা উভয়েই আমার দু’জন সৎকর্মশীল বান্দার বিবাহাধীন ছিল; কিন্তু তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। ফলে আল্লাহর পাকড়াওয়ের সামনে তারা কোনো কাজে আসেনি। আর তাদের বলা হল, জাহান্নামে প্রবেশকারীদের সাথে তোমরাও জাহান্নামে প্রবেশ কর।” এই দৃষ্টান্ত দ্বারা স্পষ্ট হয় যে নবীর নিকট আত্মীয় বা স্ত্রী হওয়া কাউকে আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারে না, বরং মুক্তি লাভের একমাত্র উপায় হলো ঈমান ও সৎকর্ম।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।