০৪:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাইনিজ রেস্টুরেন্টের নামে ৮০ কোটি টাকা ঋণ আত্মসাত

ব্যাংকিং নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রায় ৮০ কোটি টাকার ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিতর্কিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলমসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দুদকের উপপরিচালক আফরোজা হক খান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী, এভিপি ও মহিলা শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক সৈয়দা নাজমা মালেকা এবং হুমায়রা সাঈদা খানম, ব্যবসায়ী মো. আকিজ উদ্দীন, রেস্টুরেন্ট মেসার্স লা এরিস্টোক্রেসির মালিক নাজমে নওরোজ, জেড.আর.জে সার্ভে অ্যান্ড পরিদর্শক কোম্পানির মালিক শফিকুল করিম, মিশকাত ট্রেড সেন্টারের মালিক মিশকাত আহমেদ, আরিফ হাসনাইন রাবার সাপ্লাইয়ারের মালিক আরিফ হাসনাইন, নূর ট্রেডার্সের মালিক জসিম উদ্দিন, মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক জুয়েল মিয়া, রিমঝিম শাড়ি হাউজের মালিক জুয়েল মিয়া, আগমন এন্টারপ্রাইজের মালিক এরসাদ সিকদার, এম.এইচ এন্টারপ্রাইজের মালিক মনিরুল হক, নিউ বসুন্ধরা জুয়েলার্সের মালিক যিশু বণিক, আল মদিনা স্টিলের মালিক অলমগীর এবং হক মেরিন ফিশের মালিক মাহবুবুল হক। এছাড়া ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহ আলম, জাহাঙ্গীর আলম ও ইকবাল ফারুককেও আসামি করা হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের অনুমোদিত সীমা অতিক্রম করে এবং প্রাপ্যতা না থাকা সত্ত্বেও মেসার্স লা এরিস্টোক্রেসি নামে প্রতিষ্ঠানের নামে ১৫২টি ঋণ ডিল তৈরি করে মোট ৭৯ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮৪ টাকা আত্মসাত করা হয়। পরে এসব অর্থ নগদ, পে-অর্ডার বা অন্য হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে পাচার করা হয়।

গণমাধ্যমে ‘চটপটির দোকানে ২৩৪ কোটি টাকা ঋণ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর দুদক তদন্তে নামে এবং কেলেঙ্কারির চিত্র উঠে আসে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, নাজমে নওরোজ ২০০৮ সালে লা এরিস্টোক্রেসি নামের একটি রেস্টুরেন্ট চালু করেন এবং ২০১১ সালে ব্যাংকের কাজীর দেউড়ি মহিলা শাখায় হিসাব খোলেন। ওই বছরই ২ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন হয়। কিন্তু পরবর্তীতে নিয়ম ভেঙে অনুমোদিত ১.৫০ কোটি টাকার সীমা অতিক্রম করে ১৫২টি ডিলের মাধ্যমে প্রায় ৮০ কোটি টাকা ঋণ তোলা হয়।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২), (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চাইনিজ রেস্টুরেন্টের নামে ৮০ কোটি টাকা ঋণ আত্মসাত

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:৪৮:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

ব্যাংকিং নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রায় ৮০ কোটি টাকার ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিতর্কিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলমসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দুদকের উপপরিচালক আফরোজা হক খান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী, এভিপি ও মহিলা শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক সৈয়দা নাজমা মালেকা এবং হুমায়রা সাঈদা খানম, ব্যবসায়ী মো. আকিজ উদ্দীন, রেস্টুরেন্ট মেসার্স লা এরিস্টোক্রেসির মালিক নাজমে নওরোজ, জেড.আর.জে সার্ভে অ্যান্ড পরিদর্শক কোম্পানির মালিক শফিকুল করিম, মিশকাত ট্রেড সেন্টারের মালিক মিশকাত আহমেদ, আরিফ হাসনাইন রাবার সাপ্লাইয়ারের মালিক আরিফ হাসনাইন, নূর ট্রেডার্সের মালিক জসিম উদ্দিন, মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক জুয়েল মিয়া, রিমঝিম শাড়ি হাউজের মালিক জুয়েল মিয়া, আগমন এন্টারপ্রাইজের মালিক এরসাদ সিকদার, এম.এইচ এন্টারপ্রাইজের মালিক মনিরুল হক, নিউ বসুন্ধরা জুয়েলার্সের মালিক যিশু বণিক, আল মদিনা স্টিলের মালিক অলমগীর এবং হক মেরিন ফিশের মালিক মাহবুবুল হক। এছাড়া ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহ আলম, জাহাঙ্গীর আলম ও ইকবাল ফারুককেও আসামি করা হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের অনুমোদিত সীমা অতিক্রম করে এবং প্রাপ্যতা না থাকা সত্ত্বেও মেসার্স লা এরিস্টোক্রেসি নামে প্রতিষ্ঠানের নামে ১৫২টি ঋণ ডিল তৈরি করে মোট ৭৯ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮৪ টাকা আত্মসাত করা হয়। পরে এসব অর্থ নগদ, পে-অর্ডার বা অন্য হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে পাচার করা হয়।

গণমাধ্যমে ‘চটপটির দোকানে ২৩৪ কোটি টাকা ঋণ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর দুদক তদন্তে নামে এবং কেলেঙ্কারির চিত্র উঠে আসে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, নাজমে নওরোজ ২০০৮ সালে লা এরিস্টোক্রেসি নামের একটি রেস্টুরেন্ট চালু করেন এবং ২০১১ সালে ব্যাংকের কাজীর দেউড়ি মহিলা শাখায় হিসাব খোলেন। ওই বছরই ২ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন হয়। কিন্তু পরবর্তীতে নিয়ম ভেঙে অনুমোদিত ১.৫০ কোটি টাকার সীমা অতিক্রম করে ১৫২টি ডিলের মাধ্যমে প্রায় ৮০ কোটি টাকা ঋণ তোলা হয়।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২), (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।