
কারা অধিদপ্তর বাংলাদেশ জেলের নাম পরিবর্তন করে ‘কারেকশন সার্ভিসেস বাংলাদেশ’ করার উদ্যোগ নিয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) কারা সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, কারাগারকেন্দ্রীক সংশোধনের বিষয়টির উপর গুরুত্বারোপ করতে এবং সংশ্লিষ্ট আইন-কানুন যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ‘কারেকশন সার্ভিস অ্যাক্ট-২০২৫’ খসড়া চূড়ান্ত করে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
বন্দিদের অতিরিক্ত চাপ কমানোর জন্য নতুন করে ২টি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং ৪টি জেলা কারাগার চালু করা হয়েছে। ঢাকা বিভাগের কার্যক্রম আরও সমন্বয়ের জন্য বিভাগটি ভেঙে দুইটি ভাগ করা হয়েছে।
মহাপরিদর্শক বলেন, কারাগারগুলোকে নগদ টাকা মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত এক বছরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এক হাজারের বেশি অভিযান চালানো হয়েছে এবং ছোট মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। মাদকসহ কারারক্ষীদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
৫ আগস্টে ২ হাজার ২০০ জনের বেশি বন্দি পালিয়ে গিয়েছিল, যাদের মধ্যে এখনও ৭০০ বন্দি পলাতক। এদের মধ্যে ৯ জন জঙ্গি এবং ৬০ জন মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত। অস্ত্র ও গোলাবারুদও কিছু অংশ উদ্ধার হয়নি।
নারী বন্দিদের যাতায়াত সহজ করতে কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগার প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে এবং বিশেষ কারাগারে নারীদের জন্য একটি সেল খোলা হবে। বন্দিদের জন্য সপ্তাহে একবার ৫ মিনিট করে ফোন যোগাযোগের ব্যবস্থা চালু আছে, তবে অপব্যবহার রোধে অটোমেশন এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।
কম্প্রিহেন্সিভ জ্যামিং সিস্টেম ধাপে ধাপে গুরুত্বপূর্ণ কারাগারে চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে। কারাগারে রাজনৈতিক বা ভিআইপি বন্দি নেই, বরং মামলার গুরুত্ব বা ধারা অনুযায়ী ডিভিশন প্রাপ্ত বন্দিদের আলাদা করা হয়েছে।
খাবারের মান ও প্রোটিন সরবরাহ উন্নত করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বন্দিদের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে ডাক্তার নিয়োগ এবং অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।