১০:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সীমান্তে আরাকান আর্মির প্রভাব বাড়ছে, সতর্ক থাকার নির্দেশ বিজিবির

মিয়ানমারের জলসীমা অতিক্রম করায় বাংলাদেশি জেলেরা আরাকান আর্মির হাতে ধরা পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কক্সবাজার রিজিয়নের আওতাধীন রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ। বর্তমানে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির হাতে ৫১ জন বাংলাদেশি জেলে জিম্মি আছে বলে জানান তিনি। কর্নেল মহিউদ্দিন আরও বলেন, আনঅফিসিয়ালি যোগাযোগ করে আরাকান আর্মির ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে যেন আর কোনো জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া না হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে রামু সেক্টর দপ্তরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি জানান, মিয়ানমার সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ এখন পুরোপুরি বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে চলমান সংঘাতের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীও সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। নাফ নদীর মোহনায় ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ায় অনেক সময় জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে মিয়ানমার জলসীমার ভেতর দিয়ে চলাচল করে থাকে। আবার কেউ কেউ ভুলবশত সীমান্ত অতিক্রম করায় আরাকান আর্মির হাতে আটক হচ্ছে। সেক্টর কমান্ডার বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত সীমানা মেনে মাছ ধরতে হবে, এ ব্যাপারে জেলেদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে।

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে কর্নেল মহিউদ্দিন জানান, মিয়ানমারে নির্যাতিত হয়ে সীমান্তে আসা আহত ও অসহায় কিছু রোহিঙ্গাকে মানবিক কারণে বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে সীমান্ত সুরক্ষায় মাদক ও অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে রামু সেক্টরের অধীনে ৩৪, ১১, ২, ৩০ ও সর্বশেষ গঠিত ৬৪ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সীমান্ত এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে।

অন্যদিকে শুক্রবার সকালে টেকনাফ থানাধীন সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৯টি ট্রলারসহ ১২২ জেলেকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। আটককৃতদের মধ্যে ২৯ জন বাংলাদেশি ও ৯৩ জন রোহিঙ্গা। কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি ফিশিং বোটগুলো বারবার মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। এর ফলে প্রায় প্রতিদিনই আরাকান আর্মি জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আটককৃত জেলে ও জব্দকৃত বোটের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন কোস্টগার্ডের এই কর্মকর্তা।

ট্যাগ

সীমান্তে আরাকান আর্মির প্রভাব বাড়ছে, সতর্ক থাকার নির্দেশ বিজিবির

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:০১:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫

মিয়ানমারের জলসীমা অতিক্রম করায় বাংলাদেশি জেলেরা আরাকান আর্মির হাতে ধরা পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কক্সবাজার রিজিয়নের আওতাধীন রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ। বর্তমানে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির হাতে ৫১ জন বাংলাদেশি জেলে জিম্মি আছে বলে জানান তিনি। কর্নেল মহিউদ্দিন আরও বলেন, আনঅফিসিয়ালি যোগাযোগ করে আরাকান আর্মির ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে যেন আর কোনো জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া না হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে রামু সেক্টর দপ্তরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি জানান, মিয়ানমার সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ এখন পুরোপুরি বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে চলমান সংঘাতের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীও সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। নাফ নদীর মোহনায় ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ায় অনেক সময় জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে মিয়ানমার জলসীমার ভেতর দিয়ে চলাচল করে থাকে। আবার কেউ কেউ ভুলবশত সীমান্ত অতিক্রম করায় আরাকান আর্মির হাতে আটক হচ্ছে। সেক্টর কমান্ডার বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত সীমানা মেনে মাছ ধরতে হবে, এ ব্যাপারে জেলেদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে।

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে কর্নেল মহিউদ্দিন জানান, মিয়ানমারে নির্যাতিত হয়ে সীমান্তে আসা আহত ও অসহায় কিছু রোহিঙ্গাকে মানবিক কারণে বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে সীমান্ত সুরক্ষায় মাদক ও অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে রামু সেক্টরের অধীনে ৩৪, ১১, ২, ৩০ ও সর্বশেষ গঠিত ৬৪ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সীমান্ত এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে।

অন্যদিকে শুক্রবার সকালে টেকনাফ থানাধীন সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৯টি ট্রলারসহ ১২২ জেলেকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। আটককৃতদের মধ্যে ২৯ জন বাংলাদেশি ও ৯৩ জন রোহিঙ্গা। কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি ফিশিং বোটগুলো বারবার মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। এর ফলে প্রায় প্রতিদিনই আরাকান আর্মি জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আটককৃত জেলে ও জব্দকৃত বোটের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন কোস্টগার্ডের এই কর্মকর্তা।