০১:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী-স্থানীয় সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৩০ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় এ সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এর মধ্যে গুরুতর আহত প্রায় ২০ শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী ২ নম্বর গেটের মাছ বাজার সংলগ্ন একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই শিক্ষার্থী বাসায় ঢুকতে গেলে দারোয়ানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দারোয়ান ওই ছাত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। খবর পেয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

স্থানীয়রা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দ্রুত সমবেত হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরাও চবির সোহরাওয়ার্দী হলের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো হয়ে সংঘর্ষে জড়ান। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ব্যাপক ভাঙচুর ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী—আরবি বিভাগের ফুয়াদ হাসান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শাওন, ইতিহাস বিভাগের তাহসান হাবিব, লোকপ্রশাসন বিভাগের আশ্রাফ রাতুল, গণিত বিভাগের লাবিব, ইংরেজি বিভাগের হাসান জুবায়ের হিমেল, অর্থনীতি বিভাগের নাহিন মুস্তফা, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের আল-মাসনুন, ইসলামিক স্টাডিজের আশিক মিয়া, দর্শন বিভাগের মাহিন ও তামিম, সমাজতত্ত্ব বিভাগের হুমায়ুন কবির, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের রিদুয়ান, অ্যাকাউন্টিং বিভাগের রিফাত ও রিপন, বাংলা বিভাগের সাইদুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মো. ইয়েন।

চবি মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক ডা. মুহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, “আমরা আহত বহু শিক্ষার্থীকে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ জানান, রাত ১২টার দিকে নিরাপত্তা টিম ঘটনাস্থলে গেলেও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠিন হয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত উপস্থিতি তখনও নিশ্চিত করা যায়নি। অবশেষে রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেনা সদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে এবং শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান।


ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী-স্থানীয় সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত

প্রকাশিত হয়েছে: ০৬:২৭:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৩০ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় এ সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এর মধ্যে গুরুতর আহত প্রায় ২০ শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী ২ নম্বর গেটের মাছ বাজার সংলগ্ন একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই শিক্ষার্থী বাসায় ঢুকতে গেলে দারোয়ানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দারোয়ান ওই ছাত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। খবর পেয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

স্থানীয়রা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দ্রুত সমবেত হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরাও চবির সোহরাওয়ার্দী হলের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো হয়ে সংঘর্ষে জড়ান। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ব্যাপক ভাঙচুর ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী—আরবি বিভাগের ফুয়াদ হাসান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শাওন, ইতিহাস বিভাগের তাহসান হাবিব, লোকপ্রশাসন বিভাগের আশ্রাফ রাতুল, গণিত বিভাগের লাবিব, ইংরেজি বিভাগের হাসান জুবায়ের হিমেল, অর্থনীতি বিভাগের নাহিন মুস্তফা, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের আল-মাসনুন, ইসলামিক স্টাডিজের আশিক মিয়া, দর্শন বিভাগের মাহিন ও তামিম, সমাজতত্ত্ব বিভাগের হুমায়ুন কবির, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের রিদুয়ান, অ্যাকাউন্টিং বিভাগের রিফাত ও রিপন, বাংলা বিভাগের সাইদুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মো. ইয়েন।

চবি মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক ডা. মুহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, “আমরা আহত বহু শিক্ষার্থীকে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ জানান, রাত ১২টার দিকে নিরাপত্তা টিম ঘটনাস্থলে গেলেও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠিন হয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত উপস্থিতি তখনও নিশ্চিত করা যায়নি। অবশেষে রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেনা সদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে এবং শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান।