০৪:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুরা আল-বাকারার বনী ইসরাঈল ও গরু জবাইয়ের ঘটনা

সুরা আল-বাকারায় বনী ইসরাঈলের একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। এক ধনী ব্যক্তি আমীলকে তার চাচাতো ভাই সম্পত্তি দখলের জন্য হত্যা করে। পরে লাশ অন্যত্র ফেলে দিয়ে সে নিজেই কান্নাকাটি করে নির্দোষ কয়েকজনের ওপর হত্যার দায় চাপায়। ঘটনাটি সামনে এলে জনগণ হজরত মূসা (আ.)-এর শরণাপন্ন হয় এবং প্রকৃত হত্যাকারীর সন্ধান জানতে চায়।

মূসা (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়া করলে নির্দেশ আসে—একটি গরু জবাই করতে হবে। এই আদেশে বনী ইসরাঈল প্রথমে বিস্মিত হয়ে পড়ে। তারা বলে, “হে মূসা! তুমি কি আমাদের সঙ্গে উপহাস করছো?” মূসা (আ.) তখন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এটি আল্লাহর নির্দেশ, কোনো উপহাস নয়।

এরপর তারা অযথা একের পর এক প্রশ্ন করতে শুরু করে। তারা জানতে চায়, গরুর বয়স কেমন হবে, রঙ কেমন হবে, কী কাজে ব্যবহার হয়নি ইত্যাদি। আল্লাহ ধাপে ধাপে শর্ত বর্ণনা করেন—গরুটি হবে মধ্যবয়সী, গায়ের রঙ উজ্জ্বল হলুদ, যা দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়, এবং এটি কখনো জমিতে চাষাবাদ বা সেচে ব্যবহার হয়নি, হবে সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত ও নিখুঁত।

এভাবে নিজেদের জিদ ও অহেতুক প্রশ্নের কারণে তারা কাজটিকে কঠিন করে তোলে। অবশেষে তারা এমন একটি গাভী খুঁজে পায়, যা ছিল এক নেককার যুবকের। তার বাবা মৃত্যুর আগে গাভীটির বাছুরকে আল্লাহর হেফাজতে রেখে সন্তানের জন্য দোয়া করেছিলেন। পরে সেই বাছুর বড় হয়ে গাভী হয় এবং সব শর্ত পূরণ করে।

বনী ইসরাঈল শেষ পর্যন্ত চড়া মূল্যে সেই গাভী কিনে জবাই করে। গাভীর একটি অংশ মৃত আমীলের শরীরে স্পর্শ করানো হলে আল্লাহর কুদরতে তিনি জীবিত হয়ে ওঠেন। জীবিত হওয়ার পর তিনি প্রকাশ করেন, তার চাচাতো ভাই-ই আসল হত্যাকারী। এরপর তিনি আবার মৃত্যুবরণ করেন।

কোরআনের এ ঘটনাকে আলেমরা আল্লাহর এক মহা নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এতে শিক্ষণীয় বিষয় হলো—আল্লাহর নির্দেশে সন্দেহ বা অযথা প্রশ্ন করলে তা মানুষের জন্যই জটিলতা তৈরি করে। আর আল্লাহর হুকুমে সর্বদা হিকমত নিহিত থাকে, যা মানুষের জ্ঞান দিয়ে সবসময় উপলব্ধি করা যায় না।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সুরা আল-বাকারার বনী ইসরাঈল ও গরু জবাইয়ের ঘটনা

প্রকাশিত হয়েছে: ০৬:১০:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫

সুরা আল-বাকারায় বনী ইসরাঈলের একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। এক ধনী ব্যক্তি আমীলকে তার চাচাতো ভাই সম্পত্তি দখলের জন্য হত্যা করে। পরে লাশ অন্যত্র ফেলে দিয়ে সে নিজেই কান্নাকাটি করে নির্দোষ কয়েকজনের ওপর হত্যার দায় চাপায়। ঘটনাটি সামনে এলে জনগণ হজরত মূসা (আ.)-এর শরণাপন্ন হয় এবং প্রকৃত হত্যাকারীর সন্ধান জানতে চায়।

মূসা (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়া করলে নির্দেশ আসে—একটি গরু জবাই করতে হবে। এই আদেশে বনী ইসরাঈল প্রথমে বিস্মিত হয়ে পড়ে। তারা বলে, “হে মূসা! তুমি কি আমাদের সঙ্গে উপহাস করছো?” মূসা (আ.) তখন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এটি আল্লাহর নির্দেশ, কোনো উপহাস নয়।

এরপর তারা অযথা একের পর এক প্রশ্ন করতে শুরু করে। তারা জানতে চায়, গরুর বয়স কেমন হবে, রঙ কেমন হবে, কী কাজে ব্যবহার হয়নি ইত্যাদি। আল্লাহ ধাপে ধাপে শর্ত বর্ণনা করেন—গরুটি হবে মধ্যবয়সী, গায়ের রঙ উজ্জ্বল হলুদ, যা দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়, এবং এটি কখনো জমিতে চাষাবাদ বা সেচে ব্যবহার হয়নি, হবে সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত ও নিখুঁত।

এভাবে নিজেদের জিদ ও অহেতুক প্রশ্নের কারণে তারা কাজটিকে কঠিন করে তোলে। অবশেষে তারা এমন একটি গাভী খুঁজে পায়, যা ছিল এক নেককার যুবকের। তার বাবা মৃত্যুর আগে গাভীটির বাছুরকে আল্লাহর হেফাজতে রেখে সন্তানের জন্য দোয়া করেছিলেন। পরে সেই বাছুর বড় হয়ে গাভী হয় এবং সব শর্ত পূরণ করে।

বনী ইসরাঈল শেষ পর্যন্ত চড়া মূল্যে সেই গাভী কিনে জবাই করে। গাভীর একটি অংশ মৃত আমীলের শরীরে স্পর্শ করানো হলে আল্লাহর কুদরতে তিনি জীবিত হয়ে ওঠেন। জীবিত হওয়ার পর তিনি প্রকাশ করেন, তার চাচাতো ভাই-ই আসল হত্যাকারী। এরপর তিনি আবার মৃত্যুবরণ করেন।

কোরআনের এ ঘটনাকে আলেমরা আল্লাহর এক মহা নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এতে শিক্ষণীয় বিষয় হলো—আল্লাহর নির্দেশে সন্দেহ বা অযথা প্রশ্ন করলে তা মানুষের জন্যই জটিলতা তৈরি করে। আর আল্লাহর হুকুমে সর্বদা হিকমত নিহিত থাকে, যা মানুষের জ্ঞান দিয়ে সবসময় উপলব্ধি করা যায় না।