
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভোটের দিন ক্যাম্পাসের প্রবেশমুখে সেনাবাহিনীকে ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে মোতায়েনের ঘোষণা ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। প্রার্থীদের অনেকে বলছেন, সামরিক শাসনামলেও এমন নজির নেই। এই সিদ্ধান্তকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য “লজ্জাজনক” বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডাকসুর আটটি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় তিনস্তরের ব্যবস্থা থাকবে। প্রথম স্তরে থাকবেন বিএনসিসি ও প্রক্টরিয়াল টিম, দ্বিতীয় স্তরে পুলিশ, আর তৃতীয় স্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রবেশমুখে অবস্থান নেবে সেনাবাহিনী। প্রয়োজনে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে এবং ভোটকেন্দ্র কর্ডন করে রাখবে ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত।
তবে প্রার্থীরা বলছেন, এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাঁদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। ভিপি পদপ্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, “একটা ইন্টারনাল ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রচণ্ড রকমের লজ্জাজনক ব্যাপার।” একই সুরে আরেক প্রার্থী সাদিক কায়েম অভিযোগ করেন, “কোনো আলাপ–আলোচনা ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “সত্তর–আশির দশকের সামরিক শাসনেও এমন সিদ্ধান্ত নিতে দেখিনি। তখন পুলিশকেও ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হতো না।”
অন্যদিকে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেছেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই সেনাবাহিনী রাখা হচ্ছে। তবে তিনি এ–ও জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা যদি সেনা মোতায়েন না চাই, তাহলে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরও জানিয়েছে, ভোটের দিন (৯ সেপ্টেম্বর) ক্যাম্পাস সিলগালা থাকবে। বৈধ শিক্ষার্থী, অনুমোদিত সাংবাদিক ও নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রোরেল স্টেশন বন্ধ থাকবে। হলগুলোতে বহিরাগতদের অবস্থান নিষিদ্ধ থাকবে এবং ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা শিক্ষার্থীদের ভোটে অংশ নিতে অতিরিক্ত বাস চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।
যদিও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রার্থীরা নিরাপত্তা সংক্রান্ত এসব সিদ্ধান্তে দ্বিমত করেননি— বাস্তবে প্রার্থীদের বক্তব্য ভিন্ন। তাঁরা সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন।