
ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান ও এসবির সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনীতে দুটি গ্রুপ গড়ে উঠেছিল বলে জানিয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তিনি এ তথ্য দেন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দেন তিনি।
সাবেক আইজিপি তার জবানবন্দিতে বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পুলিশে রাজনৈতিক প্রভাব আরও বেড়ে যায়। প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন কিছু কিছু কর্মকর্তা। তারা নিয়মিতভাবে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় বৈঠক করতেন, যা গভীর রাত পর্যন্ত চলত। এসব বৈঠকে অংশ নিতেন সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবিপ্রধান হারুনুর রশীদ, এসবির মনিরুল ইসলাম, ঢাকার ডিআইজি নুরুল ইসলাম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি বিপ্লব কুমার, এএসপি কাফী, ওসি মাজহার, ফোরকান অপূর্বসহ আরো অনেকে। এদের মধ্যে কয়েকজনের সরাসরি যোগাযোগ ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে।
চৌধুরী মামুন আদালতে জানান, এসব কর্মকর্তা সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের ব্যক্তিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় চেইন অব কমান্ড মানতেন না। অথচ তিনি চাইতেন পুলিশ বাহিনী যেন পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করে। মূলত হাবিবুর রহমান ও মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা দুটি গ্রুপই এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত। দুই গ্রুপই চেষ্টা করত তাদের ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের ঢাকায় গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টিং দিতে।
তিনি আরও বলেন, র্যাবে দায়িত্ব পালনকালে টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন সেল (টিএফআই সেল) ও বিভিন্ন বন্দিশালার বাস্তব পরিস্থিতি তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন। আদালতে তিনি সেসব বন্দিশালার বর্ণনাও দেন, যা মামলার শুনানিতে নতুন তথ্য হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে।