
কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাট এলাকায় বাঁকখালী নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে। ইতোমধ্যে চারজনকে আটক করা হয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কস্তুরাঘাট-খুরুশকূল সংযোগ সেতুর সংলগ্ন এলাকায় উচ্ছেদ শুরু হলে দখলদাররা বাধা দেয়। তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ কনস্টেবল করিম আহত হন। পরে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. ইলিয়াস খান জানান, সোমবার থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। প্রথম দিনে কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদ হয়। দ্বিতীয় দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে অভিযান চালালে দখলদাররা হামলা করে। পুলিশ পাল্টা ধাওয়া দিয়ে চারজনকে আটক করে।
বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান জানান, দুই দিনে অন্তত ৭০ একর জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছে। উচ্ছেদ হওয়া স্থাপনার মালামাল ও মাটি নিলামে বিক্রি করা হচ্ছে। বুধবারও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাঁকখালী নদী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে উৎপত্তি হয়ে ৮১ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। এর মধ্যে নুনিয়ারছড়া থেকে মাঝিরঘাট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার এলাকায় সবচেয়ে বেশি দখল হয়েছে। গত ১০ থেকে ১২ বছরে এক হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে। যদিও ২০১০ সালে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএ-কে বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক করা হয়, জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় দখল অব্যাহত ছিল। ২০২৩ সালে জেলা প্রশাসনের অভিযানে ৬ শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও পরবর্তীতে আবার দখল হয়। বর্তমানে সেখানে নতুন করে প্রায় ২০০ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
গত ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, বাঁকখালী নদীর সীমানা নির্ধারণ করে চার মাসের মধ্যে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও নদী দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। আদালতের নির্দেশনার পরই সোমবার থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, নদীর সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে এবং পরবর্তীতে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।