
চীনের পর্যটন শহর তিয়ানজিনে ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার দুই বৈরী দেশ ভারত ও পাকিস্তান অংশ নেয়। সম্মেলন শেষে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পৃথকভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
২ সেপ্টেম্বর মোদির সঙ্গে পুতিনের বৈঠক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বিশেষ গুরুত্ব পায়, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে। পুতিনের লিমুজিনে মোদির আগমন এই বৈঠককে আরও প্রতীকী গুরুত্ব দেয়। এর পরের দিন পুতিনের সঙ্গে শেহবাজের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে শেহবাজ বলেন, “ভারতের সঙ্গে আপনাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আমরা সম্মান করি। তবে আমরাও রাশিয়ার সঙ্গে একটি দৃঢ় ও শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে চাই। রাশিয়া-পাকিস্তানের মধ্যে পরিপূরক সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য সহায়ক হবে।”
তিনি আরও বলেন, ইসলামাবাদ বাণিজ্য, জ্বালানি, কৃষি, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং জনগণ পর্যায়ে বিনিময়সহ বিভিন্ন খাতে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে আগ্রহী।
উত্তরে পুতিন বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছু বাস্তব পরিস্থিতির কারণে রাশিয়া-পাকিস্তান বাণিজ্য কমেছে, তবে এটি নগণ্য পর্যায়ের। এই হ্রাস আসলে সম্পর্ককে বিশ্লেষণ ও উন্নত করার জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত হতে পারে। তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ইঙ্গিত দেন।
পাকিস্তানে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় শত শত মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় শোক জানিয়ে পুতিন বলেন, “আমরা শুনেছি অনেক প্রাণহানি ঘটেছে। এজন্য আমরা গভীরভাবে শোকাহত।” তিনি আশা প্রকাশ করেন যে শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে পাকিস্তান বর্তমান সংকট অতিক্রম করতে সক্ষম হবে।
রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি সহযোগিতা রয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চাচ্ছে, বিশেষ করে জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে। এসসিও সম্মেলনে মোদি-পুতিন ও শেহবাজ-পুতিন বৈঠক তাই দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ভারসাম্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।