০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বোচ্চ আদালতে প্রমাণিত: তারেক রহমান নির্দোষ

বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ন্যায়বিচার পেয়েছেন। সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে তারেক রহমান নির্দোষ। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে বহুল আলোচিত মামলায় আপিল বিভাগের খালাস রায়ের পর তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত জিঘাংসার কারণে তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। সর্বোচ্চ আদালতের খালাস রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে তারেক রহমান নির্দোষ। তিনি বলেন, “এই রায়ের মাধ্যমে এটাও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রকৃত অর্থে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার চাননি। যদি প্রকৃত অপরাধীদের বিচার চাইতেন, আইভি রহমান হত্যার বিচার করতেন, কিন্তু জিঘাংসার কারণে তারেক রহমানকে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন না। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি।”

একই দিনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আদালত হাইকোর্টের নতুন করে তদন্তের পর্যবেক্ষণ বাতিল করেছেন। আদালত বলেন, নতুন করে তদন্ত করা হবে কি না, তা সরকারের বিষয়।

সকাল ১০টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য পাঁচ জন হলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।

আদালতে তারেক রহমান-বাবরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। বিএনপির অন্যান্য আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম মুকুল ও আজমল হোসেন খোকন।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।

মামলার আগের কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য, গত বছরের ১ ডিসেম্বর তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। আদালত বলেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার ছিল অবৈধ এবং আইনে এ বিচার টেকে না। চার্জশিটের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত যে বিচার করেছিলেন তা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না।

নিম্ন আদালতের রায়ে, ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ফাঁসি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ কয়েকশ নেতা-কর্মী।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

সর্বোচ্চ আদালতে প্রমাণিত: তারেক রহমান নির্দোষ

প্রকাশিত হয়েছে: ০৯:২০:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ন্যায়বিচার পেয়েছেন। সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে তারেক রহমান নির্দোষ। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে বহুল আলোচিত মামলায় আপিল বিভাগের খালাস রায়ের পর তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত জিঘাংসার কারণে তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। সর্বোচ্চ আদালতের খালাস রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে তারেক রহমান নির্দোষ। তিনি বলেন, “এই রায়ের মাধ্যমে এটাও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রকৃত অর্থে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার চাননি। যদি প্রকৃত অপরাধীদের বিচার চাইতেন, আইভি রহমান হত্যার বিচার করতেন, কিন্তু জিঘাংসার কারণে তারেক রহমানকে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন না। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি।”

একই দিনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আদালত হাইকোর্টের নতুন করে তদন্তের পর্যবেক্ষণ বাতিল করেছেন। আদালত বলেন, নতুন করে তদন্ত করা হবে কি না, তা সরকারের বিষয়।

সকাল ১০টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য পাঁচ জন হলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।

আদালতে তারেক রহমান-বাবরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। বিএনপির অন্যান্য আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম মুকুল ও আজমল হোসেন খোকন।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।

মামলার আগের কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য, গত বছরের ১ ডিসেম্বর তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। আদালত বলেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার ছিল অবৈধ এবং আইনে এ বিচার টেকে না। চার্জশিটের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত যে বিচার করেছিলেন তা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না।

নিম্ন আদালতের রায়ে, ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ফাঁসি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ কয়েকশ নেতা-কর্মী।