০৭:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ পাঠালো ১১ টনের জরুরি ত্রাণ ও ঔষধ

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ২,২০৫ জন নিহত এবং ৩,৬৪০ জন আহত হয়েছেন। এর পাশাপাশি ৮,০০০-এর বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। খাদ্য, পানি, চিকিৎসা এবং ত্রাণের অভাবে মানবিক বিপর্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

স্থানীয় প্রভাব

ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দুতে পরপর কম্পনের কারণে গ্রামাঞ্চলগুলোতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ দেখা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে বসবাসকারীরা কাঁচা ঘর ও স্কুল, হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থাপনা হারিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, খাদ্য ও নিরাপদ পানির অভাব এবং আশ্রয়ের সংকটের কারণে শিশু ও বৃদ্ধদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

এক স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা এখন কোথায় যাব, কীভাবে বাঁচব, কেউ সাহায্য করছে না।” ভূমিকম্পে আহত অনেক মানুষকে ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়া ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশি ত্রাণ: জীবনরক্ষাকারী পদক্ষেপ

বাংলাদেশ এই মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছে। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি পরিবহন বিমান ১১ দশমিক ২৭ টন জরুরি ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে কাবুলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে: তাঁবু, কম্বল, শীতবস্ত্র, খাবার পানি, শুকনো খাবার, কাপড়, বিস্কুট, মিল্ক পাউডার, নুডুলস এবং ঔষধ।

বিমান প্রস্থান আগে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আলীমুল আমীন সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। এ সময় বিমান বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

এ ঘটনায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (WFP) এবং রেড ক্রস সহ বিভিন্ন মানবিক সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি ত্রাণ পৌঁছে দিতে তৎপর। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে খাবার, পানি, তাঁবু ও মেডিক্যাল কিট অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিতরণ করা হচ্ছে।

বিপর্যয় মোকাবিলায় চ্যালেঞ্জ

প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আহতদের চিকিৎসা ও হাসপাতালের অবকাঠামো নষ্ট হওয়ায় চিকিৎসা সেবা অনেকটাই ব্যাহত। সড়ক, যোগাযোগ ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ত্রাণ পৌঁছানোও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে, বাংলাদেশের এই মানবিক সহায়তা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য জীবনরক্ষাকারী পদক্ষেপ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। তাঁবু, খাবার ও ঔষধের দ্রুত বিতরণের মাধ্যমে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা অভাবে আক্রান্তদের সাহায্য করা সম্ভব হবে।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ পাঠালো ১১ টনের জরুরি ত্রাণ ও ঔষধ

প্রকাশিত হয়েছে: ০৮:১৭:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ২,২০৫ জন নিহত এবং ৩,৬৪০ জন আহত হয়েছেন। এর পাশাপাশি ৮,০০০-এর বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। খাদ্য, পানি, চিকিৎসা এবং ত্রাণের অভাবে মানবিক বিপর্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

স্থানীয় প্রভাব

ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দুতে পরপর কম্পনের কারণে গ্রামাঞ্চলগুলোতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ দেখা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে বসবাসকারীরা কাঁচা ঘর ও স্কুল, হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থাপনা হারিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, খাদ্য ও নিরাপদ পানির অভাব এবং আশ্রয়ের সংকটের কারণে শিশু ও বৃদ্ধদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

এক স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা এখন কোথায় যাব, কীভাবে বাঁচব, কেউ সাহায্য করছে না।” ভূমিকম্পে আহত অনেক মানুষকে ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়া ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশি ত্রাণ: জীবনরক্ষাকারী পদক্ষেপ

বাংলাদেশ এই মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছে। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি পরিবহন বিমান ১১ দশমিক ২৭ টন জরুরি ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে কাবুলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে: তাঁবু, কম্বল, শীতবস্ত্র, খাবার পানি, শুকনো খাবার, কাপড়, বিস্কুট, মিল্ক পাউডার, নুডুলস এবং ঔষধ।

বিমান প্রস্থান আগে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আলীমুল আমীন সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। এ সময় বিমান বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

এ ঘটনায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (WFP) এবং রেড ক্রস সহ বিভিন্ন মানবিক সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি ত্রাণ পৌঁছে দিতে তৎপর। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে খাবার, পানি, তাঁবু ও মেডিক্যাল কিট অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিতরণ করা হচ্ছে।

বিপর্যয় মোকাবিলায় চ্যালেঞ্জ

প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আহতদের চিকিৎসা ও হাসপাতালের অবকাঠামো নষ্ট হওয়ায় চিকিৎসা সেবা অনেকটাই ব্যাহত। সড়ক, যোগাযোগ ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ত্রাণ পৌঁছানোও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে, বাংলাদেশের এই মানবিক সহায়তা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য জীবনরক্ষাকারী পদক্ষেপ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। তাঁবু, খাবার ও ঔষধের দ্রুত বিতরণের মাধ্যমে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা অভাবে আক্রান্তদের সাহায্য করা সম্ভব হবে।