০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে আরও ২৩ জন নিহত, আহত শতাধিক

ইসরায়েলের নিরলস হামলা, অবরোধ আর দুর্ভিক্ষে গাজায় প্রতিদিন প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। গাজায় ইসরায়েলের লাগাতার বোমাবর্ষণে একদিনে অন্তত আরও ৬৮ জন নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। শুধু শনিবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৩৬৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে আনা হয়েছে আরও ৬৮ জনের মরদেহ এবং আহত হয়েছেন ৩৬২ জন। এতে মোট আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৬২ হাজার ৩৬৭ জনে।

মন্ত্রণালয় জানায়, বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় পড়ে আছেন, যাদের উদ্ধার করতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা। অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও ২৩ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৪৩ জন। চলতি বছরের ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত শুধু সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৩৮৫ জন এবং আহত হয়েছেন ১৭ হাজার ৫৭৭ জন।

অন্যদিকে, ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মৃত্যুর মিছিলও বাড়ছে গাজায়। গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে মারা গেছেন আরও ৬ ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে একজন শিশু। এতে অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮২ জনে, যার মধ্যে ১৩৫ শিশু।

গত ২ মার্চ থেকে গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। ফলে ২৪ লাখ মানুষের এ ভূখণ্ড এখন ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে। জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা জরিপে গাজার উত্তরাঞ্চলে ইতোমধ্যেই দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হওয়া গেছে। সংস্থাটি আশঙ্কা করছে, চলতি মাসের শেষ নাগাদ এ দুর্ভিক্ষ আরও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়বে।

এছাড়া ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল নতুন করে গাজায় হামলা শুরু করে। এ পর্যন্ত এ হামলায় নিহত হয়েছেন ১১ হাজার ৮২৮ জন এবং আহত হয়েছেন ৫০ হাজার ৩২৬ জন। এতে জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যত ভেঙে গেছে।

এদিকে শুক্রবার গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ৭০০তম দিনে প্রবেশ করেছে। দীর্ঘ এ হামলায় গোটা ভূখণ্ড বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে ডুবে যাচ্ছে মানুষ।

গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) মামলা চলছে।

ট্যাগ

মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে আরও ২৩ জন নিহত, আহত শতাধিক

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:১৬:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইসরায়েলের নিরলস হামলা, অবরোধ আর দুর্ভিক্ষে গাজায় প্রতিদিন প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। গাজায় ইসরায়েলের লাগাতার বোমাবর্ষণে একদিনে অন্তত আরও ৬৮ জন নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। শুধু শনিবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৩৬৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে আনা হয়েছে আরও ৬৮ জনের মরদেহ এবং আহত হয়েছেন ৩৬২ জন। এতে মোট আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৬২ হাজার ৩৬৭ জনে।

মন্ত্রণালয় জানায়, বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় পড়ে আছেন, যাদের উদ্ধার করতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা। অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও ২৩ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৪৩ জন। চলতি বছরের ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত শুধু সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৩৮৫ জন এবং আহত হয়েছেন ১৭ হাজার ৫৭৭ জন।

অন্যদিকে, ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মৃত্যুর মিছিলও বাড়ছে গাজায়। গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে মারা গেছেন আরও ৬ ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে একজন শিশু। এতে অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮২ জনে, যার মধ্যে ১৩৫ শিশু।

গত ২ মার্চ থেকে গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। ফলে ২৪ লাখ মানুষের এ ভূখণ্ড এখন ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে। জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা জরিপে গাজার উত্তরাঞ্চলে ইতোমধ্যেই দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হওয়া গেছে। সংস্থাটি আশঙ্কা করছে, চলতি মাসের শেষ নাগাদ এ দুর্ভিক্ষ আরও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়বে।

এছাড়া ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল নতুন করে গাজায় হামলা শুরু করে। এ পর্যন্ত এ হামলায় নিহত হয়েছেন ১১ হাজার ৮২৮ জন এবং আহত হয়েছেন ৫০ হাজার ৩২৬ জন। এতে জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যত ভেঙে গেছে।

এদিকে শুক্রবার গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ৭০০তম দিনে প্রবেশ করেছে। দীর্ঘ এ হামলায় গোটা ভূখণ্ড বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে ডুবে যাচ্ছে মানুষ।

গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) মামলা চলছে।