
সরকারি ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস নির্ধারণ করেছে সরকার। এর মধ্যে তিন মাস প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ এবং এক মাস মাঠ পর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় জানানো হয়, কর্মকর্তাদের উচ্চশিক্ষায় ভর্তির বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছে। আগে যেখানে মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা ছিল ৪৫ বছর, এখন তা বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হয়েছে। এছাড়া পিএইচডি অধ্যয়নরত কর্মকর্তাদের প্রতি বছর গবেষণা তত্ত্বাবধায়কের কাছ থেকে অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রত্যয়ন সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। তা না হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ থাকবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারি সব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে মূল্যায়নের আওতায় আনতে হবে। প্রশিক্ষণের ধরণ, মান ও কার্যকারিতা যাচাই করে ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং তা নিয়মিত পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য একটি স্বাধীন ইউনিট গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়, যারা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, ‘সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণ’ নাম পরিবর্তন করে এর নতুন নাম রাখা হবে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’। হালনাগাদকৃত কারিকুলামের ভিত্তিতে এ প্রশিক্ষণ মাঠপর্যায়ের সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া কর্মকর্তারা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ মঞ্জুর পেতে পারবেন।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশে এবং দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণের মডিউলে ম্যুরালিটি, বিহেভিরিয়াল সায়েন্স ও কোড অফ এথিক্স অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের কার্যকারিতা, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মান এবং সার্বিক অগ্রগতি মূল্যায়নের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করারও সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়েছে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।