০৪:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নেপালে সংসদ ভেঙে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির সুপারিশে দেশটির সংসদ ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল। পাশাপাশি আগামী বছরের মার্চে নতুন নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্টের প্রেস উপদেষ্টা কিরণ পোখরেল বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নেপালে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গতকাল রাতেই সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শপথ নেন। স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে তিনি রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ নেন। এর মাধ্যমে তিনি দেশটির ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে গঠিত ছোট আকারের অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভার মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় মাস, যার মূল দায়িত্ব হবে আগামী নির্বাচন আয়োজন।

শপথের আগে জেন-জির বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি, প্রেসিডেন্ট পাউডেল ও সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেলের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সুশীলাকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করার বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে ওঠে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে নেপাল অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদে জেন-জির নেতৃত্বে দেশজুড়ে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। গত সোমবার বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে প্রবেশের চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কয়েকজন শিক্ষার্থী নিহত হন। এতে ক্ষোভ আরও বাড়তে থাকে। আন্দোলনের চাপের মুখে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন কেপি শর্মা অলি। পদত্যাগের পর তিনি গা ঢাকা দেন। ওইদিন বিক্ষুব্ধ জনতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের বাড়িতে হামলা চালায়, এমনকি অর্থমন্ত্রীকে রাস্তায় পেটানোর ঘটনাও ঘটে।

সুশীলা কার্কি ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নেপালের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দেশটির প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি ছিলেন। দায়িত্ব পালনের সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, নেপালের উন্নয়নে ভারত নানা সহায়তা দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, সুশীলার নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা ও আগামী নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।


ট্যাগ

নেপালে সংসদ ভেঙে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

প্রকাশিত হয়েছে: ০২:১৮:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির সুপারিশে দেশটির সংসদ ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল। পাশাপাশি আগামী বছরের মার্চে নতুন নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্টের প্রেস উপদেষ্টা কিরণ পোখরেল বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নেপালে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গতকাল রাতেই সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শপথ নেন। স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে তিনি রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ নেন। এর মাধ্যমে তিনি দেশটির ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে গঠিত ছোট আকারের অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভার মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় মাস, যার মূল দায়িত্ব হবে আগামী নির্বাচন আয়োজন।

শপথের আগে জেন-জির বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি, প্রেসিডেন্ট পাউডেল ও সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেলের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সুশীলাকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করার বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে ওঠে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে নেপাল অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদে জেন-জির নেতৃত্বে দেশজুড়ে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। গত সোমবার বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে প্রবেশের চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কয়েকজন শিক্ষার্থী নিহত হন। এতে ক্ষোভ আরও বাড়তে থাকে। আন্দোলনের চাপের মুখে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন কেপি শর্মা অলি। পদত্যাগের পর তিনি গা ঢাকা দেন। ওইদিন বিক্ষুব্ধ জনতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের বাড়িতে হামলা চালায়, এমনকি অর্থমন্ত্রীকে রাস্তায় পেটানোর ঘটনাও ঘটে।

সুশীলা কার্কি ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নেপালের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দেশটির প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি ছিলেন। দায়িত্ব পালনের সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, নেপালের উন্নয়নে ভারত নানা সহায়তা দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, সুশীলার নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা ও আগামী নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।