০৫:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানো মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

আশুলিয়ায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় ছয়জনের লাশ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রথম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ এই সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

ট্রাইব্যুনাল–২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই কার্যক্রম পরিচালনা করেন। অন্য দুই সদস্য ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

এদিন আদালতে সাক্ষ্য দেন শহীদ আস সাবুরের ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম এবং শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের বাবা। তবে শুধুমাত্র রেজওয়ানুল ইসলামের জেরা সম্পন্ন হয়েছে। সজলের বাবার সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান থাকায় বাকি অংশ আগামী দিনে নেওয়া হবে।

প্রথম দিনের কার্যক্রম শেষে প্রসিকিউশন জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর পুলিশের ভ্যানে তুলে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ওই সময় একজন ভুক্তভোগী জীবিত ছিলেন, কিন্তু তাকেও নির্মমভাবে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। প্রসিকিউশনের দাবি, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নৃশংসতার নজির বিরল।

এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মামলার সূচনা বক্তব্য দেন। তিনি ঘটনাটিকে মানবতার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করেন।

এই মামলায় সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ মোট ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আটজন বর্তমানে কারাগারে, বাকিরা পলাতক। আদালত পলাতকদের গ্রেপ্তার করে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে।

তবে উপস্থিত আসামিদের মধ্যে সাবেক এসআই শেখ আবজালুল হক নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। আদালত তার লিখিত আবেদন গ্রহণের পর তাকে রাজসাক্ষী হিসেবে অনুমোদন দেন।

এর আগে ২১ আগস্ট আদালত আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া হয় ৩১৩ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র, ৬২ জন সাক্ষী এবং ১৬৮ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণ।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত হন। পরে তাদের লাশ ভ্যানে তুলে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। জীবিত অবস্থায় থাকা একজনকেও বাঁচতে দেওয়া হয়নি, পেট্রোল ঢেলে তাকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়।

পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানো মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

প্রকাশিত হয়েছে: ০৮:১৯:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আশুলিয়ায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় ছয়জনের লাশ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রথম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ এই সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

ট্রাইব্যুনাল–২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই কার্যক্রম পরিচালনা করেন। অন্য দুই সদস্য ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

এদিন আদালতে সাক্ষ্য দেন শহীদ আস সাবুরের ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম এবং শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের বাবা। তবে শুধুমাত্র রেজওয়ানুল ইসলামের জেরা সম্পন্ন হয়েছে। সজলের বাবার সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান থাকায় বাকি অংশ আগামী দিনে নেওয়া হবে।

প্রথম দিনের কার্যক্রম শেষে প্রসিকিউশন জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যার পর পুলিশের ভ্যানে তুলে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ওই সময় একজন ভুক্তভোগী জীবিত ছিলেন, কিন্তু তাকেও নির্মমভাবে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। প্রসিকিউশনের দাবি, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নৃশংসতার নজির বিরল।

এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মামলার সূচনা বক্তব্য দেন। তিনি ঘটনাটিকে মানবতার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করেন।

এই মামলায় সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ মোট ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আটজন বর্তমানে কারাগারে, বাকিরা পলাতক। আদালত পলাতকদের গ্রেপ্তার করে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে।

তবে উপস্থিত আসামিদের মধ্যে সাবেক এসআই শেখ আবজালুল হক নিজের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। আদালত তার লিখিত আবেদন গ্রহণের পর তাকে রাজসাক্ষী হিসেবে অনুমোদন দেন।

এর আগে ২১ আগস্ট আদালত আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া হয় ৩১৩ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র, ৬২ জন সাক্ষী এবং ১৬৮ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণ।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত হন। পরে তাদের লাশ ভ্যানে তুলে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। জীবিত অবস্থায় থাকা একজনকেও বাঁচতে দেওয়া হয়নি, পেট্রোল ঢেলে তাকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়।

পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)।