
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলা মামলায় তিনিই সম্ভবত শেষ সাক্ষী হবেন। তার সাক্ষ্য গ্রহণের পরই ট্রাইব্যুনাল রায়ের দিকে এগোবে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে আরও বলেন, এটি কেবল একটি মামলা নয়, এর মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে ন্যায়বিচার পাওয়া যেতে পারে। তবে সারাদেশে গণহত্যা, নির্যাতন, গ্রেপ্তার, গুম-খুনের মতো ঘটনাগুলোরও বিচার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে, যা দীর্ঘ সময় ধরে চলবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আগামী নির্বাচনের পরও যেন এই বিচার প্রক্রিয়া কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে একটি রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান। পাশাপাশি, সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে জুলাই গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া চলমান রাখার অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্ত করার প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন।
ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম সম্পর্কে নাহিদ ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত বিচার কাজে তারা সন্তুষ্ট। মামলাটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে রায়ের দিকে এগোচ্ছে। তবে বাকি মামলাগুলোও যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে এগিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য নির্বাচনের আগেই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের একটি সমন্বিত রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত।
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করে সরকারকে তবে এই মামলার রায় হয়ে গেলে তাকে ফিরিয়ে এনে শাস্তি দেওয়ার আর কোনো সুযোগ থাকবে না। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারসহ যেকোনো সরকারেরই এ বিষয়ে নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সরকার এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে।
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার এই মামলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল আজ। এ জন্য তিনি দুপুরে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হন। তবে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম জানান, মাহমুদুর রহমানের স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীর জেরা শেষ না হওয়ায় আজ নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য গ্রহণের কম রয়েছে।
এদিন সকালে কারাগার থেকে এই মামলার অন্যতম আসামি (পরবর্তীতে রাজসাক্ষীতে পরিণত) সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তার উপস্থিতিতেই মামলার ১৬তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম চলছে।